তেলাপোকা নিধনে বিশেষ অভিযান চালালাম।

in hive-120823 •  5 months ago 
pexels-erik-karits-2093459-27033323.jpg

Pexels

ঢাকা শহরে সম্ভবত এমন কোন বাসা-বাড়ি নেই যে বাসার রান্নাঘরে তেলাপোকার উপদ্রব নেই।আমার বাসারও একই অবস্থা।যেহেতু দিনের একটা বড় সময় আমি বাসায় থাকি না যার কারণে তেলাপোকার সশস্ত্র বাহিনীর কাছে আমি একেবারে আত্মসমর্পিত ছিলাম।মাসে চার-পাঁচটা লাল হিট শুধুই আমার অর্থের অপচয় করেছে।

কিছুদিন ধরেই অনলাইনে খুব ঘাটাঘাটি করছিলাম যে একটা ভালো তেলাপোকা নিধনের ঔষধ কিনবো।খুঁজে ও পেলাম একটি জেল যা বিশেষ অফারে ২৭০ টাকা।ডেলিভারি চার্জ না হয় বাদই দিলাম।দামের তুলনায় পরিমাণে সম্পূর্ণরূপে ফাঁকিবাজি।মাত্র ১৫ গ্রাম।মোটামুটি সাইজের রান্নাঘরে আপনি যদি সঠিকমতো ১ম বার ব‍্যবহার করেন তাহলে আপনার ২০ প‍্যাকেট লাগবে।

pexels-picasjoe-11362662.jpg

Pexels

৭ দিন পর আবার ২০ প‍্যাকেটের প্রয়োজন হবে।একবার দিলে কাজ হয় না, ৭ দিন পর আবার দিতে হয়।শুধু রান্নাঘরেই ব‍্যবহার করলে এই ৪০টি প‍্যাকটের দাম হবে ১০৮০০ টাকা।ওরে বাবা!! এ তো কঠিন ব্যাপার।তবে আমি তো দমে যাওয়ার মানুষ নই।

নেমে পড়লাম বিশেষ অভিযানে।সস্তা,টেকসই ও নিরাপদ পদ্ধতি।যেটা আমি মাছি মারার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করে থাকি।হঠাৎ মনে হলো তবে তেলাপোকায় কেন নয়? শুরু হলো আমার শলা থেরাপি।নারিকেল গাছের শলা।

প্রথম দুদিন কাজ করলাম পুরো রান্নাঘর পরিষ্কার করার উপর।সমস্ত অপ্রয়োজনীয় জিনিস সরিয়ে ফেললাম।এর ফাঁকে ফাঁকে যেখান থেকে তেলাপোকা বের হচ্ছে তার উপর চলছিল শলার বাড়ি।দুই দিনে রান্নাঘরের আনাচে-কানাচে ডীপ ক্লীন করার পর ও প্রতিদিন অন্তত ২০ বার চলছিল শলার থেরাপি।

pexels-yama-lamido-1650778617-28930679.jpg

Pexels

সবচেয়ে বেশি থেরাপি খেয়েছে গুড়ি গুড়ি তেলাপোকা গুলো যেগুলোকে বড় হতে দেওয়ার সুযোগ মোটেও দেয়া যাবে না।রাতের বেলা লাইট বন্ধ করে দিয়ে তেলাপোকা কে আমন্ত্রণ জানাই যে তুমি বের হও,আমি আসছি। ওরাও ভদ্রলোকের মতো বের হয়।চার-পাঁচ দিনের মাথায় শলা থেরাপি দিতে দিতে আমি রীতিমতো ক্লান্ত হয়ে পড়লাম।আমার হাত ও ব্যথা হয়ে গেলো।

কিন্তু দুঃখের বিষয় যে, নাহ! তেলাপোকা তো ক্লান্ত হচ্ছে না।সে তো অনর্গল আসছে আর যাচ্ছে।আর আমার সামনে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমিও বলি তবে রে দাঁড়া! তুই যেমন বাঘা ওল, আমিও তেমনি বুনো তেঁতুল।এভাবে আরো তিন- চার দিন চলল বিশেষ থেরাপি।অবশেষে দেখলাম যে পরিশ্রমের গাছে ফল ধরেছে।তেলাপোকার চোখ রাঙ্গানি যথেষ্ট কমে গেছে।বুঝতে পারছি কোথাও টিকতে পারছে না, খাবার দাবারও পাচ্ছে না।

আজ দুপুরে যখন রান্নাঘরে লাইট জ্বালালাম, তাকিয়ে দেখলাম একটা তেলাপোকাও নেই। অবচেতন মনেই আনন্দ এসে গেলো।বাজারে শলার কেজি ১২০ টাকা।তবে আমি পুরো ফ্রিতে আমার কাজ সেরেছি।কারণ শলা গুলো আমার ননাসদের দেওয়া।ভাবছি ওনারা আবার আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করেন কিনা!!!আমি উনাদের কষ্ট করে কেটে নেওয়া শলাগুলোর এই ব্যবহার করেছি।

pexels-asphotograpy-94865.jpg

Pexels

সুফল ধরে রাখতে এই অভিযান নিয়মিত চালিয়ে যেতে হবে।আসলে আপনারা হয়তো অনেকেই এই পোস্টটি পড়ে হেসে দিতে পারেন।তবে সত্যিকার অর্থেই আমি উপকার পেয়েছি। লেখাটি কেমন লাগলো মন্তব্য করে অবশ্যই জানাবেন।

DiHLrjiPetHt6ciV9azim9NPHuTMQ59H51nYE8xqo83cHwKoMWBRmLojbYwVzV9tQHbQbS38qpoDVF7h1MKDoicCr8iqdBXbBpeXUAhSRs...v2uoYJLLGNKHUduDD6QojicEZMKyFqVqBMZbqeFstcERLXyHRx3F9DTnEwa2aLuKJt3RPuhi1j4YJwfM92kheG2sV3FFD2kYtYaQETCN5Y2txGb7x7NKKhqT3C.png

◦•●◉✿ধন্যবাদ সবাইকে লেখাটি পড়ার জন্য।✿◉●•◦

◦•●◉✿ Thank You For Reading ✿◉●•◦

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

সুফল ধরে রাখতে এই অভিযান নিয়মিত চালিয়ে যেতে হবে।

আপনার সম্পূর্ণ লেখাটি মজার ছিল, কিন্তু উপরিউক্ত লাইনটা শিক্ষণীয়! আসলে বিষয়টি বোধহয় একটি কিটের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য নয়, এটাকে জীবনের সব ক্ষেত্রেই মূলমন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা উচিত বলে আমি মনে করি।

যে দৃঢ়তার সাথে আপনি আরশোলা মারার অভিযান চালিয়েছেন, তেমনি দৃঢ়তা আপনার জীবনের সর্বত্র বলবৎ হোক এই কামনা করি।

লেখা পড়ার অভ্যেস আজও চালিয়ে যাচ্ছি, তবে দমন করতে সক্ষম হই নি আপনার মতো।

খুব ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পেয়ে দিদি।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে❤️