হ্যালো বন্ধুরা!
আসসালামু আলাইকুম।
কেমন আছেন সবাই? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবানীতে আপনারা অনেক অনেক ভাল রয়েছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় বেশ ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে নজরুলের জীবন কাহিনী নামক গল্পের চতুর্থ পর্ব শেয়ার করতে চলেছি। এই গল্পের মূল কাহিনী লোকের মুখ থেকে শোনা। আমি আমার মতো করে একটু সুন্দর রূপ দিয়ে সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করার চেষ্টা করব।
মিনা ও আলেয়ার বড় জা, আলেয়ার প্রতি এমন খারাপ আচরণগুলো স্বামীর কাছে বলে। কিন্তু তার স্বামী বাইরে ব্যবসা করতে যায় এবং বাসায় ফিরে অনেক দিন পর। তার এই সমস্ত বিষয় নিয়ে মাথা ঘামানোর কোন প্রয়োজন মনে করে না। সে তার বউকে মানা করে দেয় তাদের বিষয় নিয়ে যেন মাথা না ঘামায়। কারণ তারা তো পৃথক হয়ে গেছে। আলাদা বাড়িতে থাকে তারা। তাই বড় জা আর এই নিয়ে মাথা ঘামায় না। একদিন দেখা গেল কি কারনে মিনা ও আলেয়ার মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়েছে। মিনা আলেয়াকে দোষারোপ করছে তার স্বর্ণ অলংকার চুরি হওয়া নিয়ে। তার কথা আবারো আলেয়া তার স্বর্ণ অলংকার চুরি করে বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছে। এখানে আবারও খায়রুল একটা বুদ্ধি খেলেছে। তার স্ত্রীর অলংকার গুলো সরিয়ে রেখে। এই নিয়ে বেশ অনেক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় তাদের পরিবারের মধ্যে। একটি পর্যায়ে নজরুল তার স্ত্রী আলেয়াকে ভুল বুঝতে থাকে। আরেক দিকে মেজ ভাই খাইরুল ছোট ভাই নজরুলের কানে বিষ দিতে থাকে। নজরুল ভেবে দেখল সত্যি তো এমন মেয়ে যদি আমাদের ঘরে থাকে তাহলে যে কোন মুহূর্তে এভাবে জিনিস চুরি করে বাপের বাড়িতে পার করবে আর তাদের মান সম্মান নষ্ট করে দিবে। গরিব ঘরের মূর্খ ঘরের মেয়ের কোন মান সম্মান নেই, তাই বলে কি তাদের মান-সম্মান থাকবে না। একটি পর্যায়ে এসে ভাইয়ের কথায় সম্মতি দিয়ে বউকে তালাক করে দেয়।
গরিবের মেয়ে আলেয়া কিছুই বুঝলো না, শুধু চোখের পানি আর নাকের পানি এক হতে থাকলো। গ্রামের মানুষ সবাই বলতে থাকলো তারা বড়লোক মানুষ তাই এই মেয়েটার সাথে অন্যায় অবিচার করল। মেয়েটার থেকে ইচ্ছে মতো সুখ ভোগ করে নিয়ে তালাক দিয়ে বিদায় করে দিল মিথ্যা অপবাদ দিয়ে। কারণ সবাই জানে আলেয়ার মত ভালো মেয়ে এই গ্রামে হয় না। সে কখনো কোন জিনিসকে লোভ করে না। আলেয়া অনেক কান্না করে বেড়ায়। সে মন থেকে ভুলতে পারেনা নজরুলকে। মানুষে তার কাছে অনেক প্রশ্ন করে সে সেই আগের মতই স্বাভাবিক মন মানসিকতা নিয়ে উত্তর দেয়। সে এতদিনে নজরুলের প্রতি এত ভালোবাসা পয়দা করে ফেলেছে, নজরুল ছাড়া কিছুই বোঝেনা সে। তার দিন দিন খাওয়া দাওয়া বন্ধ হয়ে গেল। সব সময় চোখের পানিতে একাকার হয়ে থাকতো।
নজরুল যেন আলেয়াকে ভুলে থাকতে পারে। এই জন্য খাইরুল শালিকার পরীক্ষার নাম করে নজরুলকে রিনা ও মিনার সাথে পাঠিয়ে দেয় শহরে। নজরুলের মধ্যে একটু রাগ ছিল আলেয়ার প্রতি। পুনরায় মনের মধ্যে আলেয়ার প্রতি মায়া জন্মানোর পূর্বে শহরে পাঠিয়ে দিয়ে খাইরুল বেশ আনন্দে আনন্দিত। এদিকে নজরুল শহরে গিয়ে নতুন পরিবেশ ও ভাইয়ের শালিকার সাথে বেশ আনন্দেই দিন পার করে। একদিকে দেখা যায় ভাইয়ের শ্যালিকার পরীক্ষা শেষ হয়েছে। ততদিনে নজরুল ভাইয়ের শালিকার অন্যান্য বান্ধবীদের সাথে অনেক মিল মহব্বত গড়ে তুলেছে। দীর্ঘদিন লেখাপড়া শেষ করে সে যেন সমবয়সী মেয়েদের সাথে চলাফের আর সেই অনুভূতিটা হারিয়ে ফেলছিল। তবে ভাইয়ের শ্যালিকার বান্ধবীদের সাথে ওঠাবসা করে আধুনিকতার ছোঁয়া যেন নতুন করে তার মধ্যে ফিরে আসে। সে দিনে দিনে রিনার প্রতি আসক্ত হতে থাকে। এরপর খাইরুল শহরের আসে। তারপর যখন সে দেখে নজরুল ও রিনার মধ্যে ভাব জমে গেছে, খুব দ্রুত তাদের দুজনার বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়। এরপর বেশ অনেকদিন নজরুল ও রিনাকে খাইরুলের বাসায় রাখা হয়। ইতোমধ্যে নজরুলের মনের মধ্যে আলেয়ার স্মৃতি ভুলতে বসেছে। রিনা কে পেয়েছে খুব আনন্দে দিন পার করছে। কিন্তু জীবনে প্রথম প্রেমের প্রথম স্মৃতি আলেয়ার হাত ধরে। লেখাপড়া শেষ পর্যন্ত নজরুল ভালো রেজাল্ট করেছে কিন্তু কোন মেয়ের প্রেমে পড়ে নাই। তার ইচ্ছা ছিল উচ্চ পর্যায়ে সরকারি চাকরি করবে। তাই প্রেম ভালোবাসার বিষয়টা তার মধ্যে প্রশ্রয় পায়নি। সে মাঝে মাঝে অনুভব করে লেখাপড়া জীবনটা প্রেম করার সময়। সে বোকার মত সে সময়টা নষ্ট করেছে লেখাপড়ার পিছে কাটিয়ে।
নজরুল বুঝতে শেখে, আলেয়ার মধ্যে ভালোবাসা থাকলেও রোমান্টিকতা ছিল না। কিন্তু রিনা অনেকটা রোমান্টিক একটি মেয়ে। তার স্টাইলিশ চোখের চাওনি যেন সব সময় পাগল করে রাখে নজরুলকে। নজরুল তার প্রেমে যেন অন্ধ হতে থাকে। সে এক্কেবারে রিনার প্রেমে হাবুডুবু খেয়ে অতি আসক্তিয়া পরিণত হয়ে যায়। সে একমাত্র বউকে ছাড়া যেন কিছুই বুঝে না। তবে মাঝেমধ্যে নজরুল রিনার বান্ধবীদের দেখে যেন আরো কিছু পাওয়ার অনুভব করে থাকে। মাঝেমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যাই তারা। সব সময় সে ভাবতে থাকে কতটাই না ভুল করেছিল গন্ডগ্রামের অশিক্ষিত মেয়ের সাথে বিয়ে করে। চাকরি পাওয়ার পর যদি বাইরের পরিবেশে চলাচল করত তাহলে মূর্খ মানুষ সাথে নিয়ে কিভাবে চলতো এমন পরিবেশে। ভাগ্য ভালো তার ভাই তাকে বিয়ে করিয়ে দিয়েছে রিনার সাথে। সে কত সুন্দর কথা বলে, কত স্টাইলে চলে। যেন রিনাকে পেয়ে নজরুলের জীবন ধন্য। এভাবেই চলতে থাকে ছয় মাস। দিনে দিনে রিনার ডিমান্ড বেড়ে চলেছে। সে নজরুল এর কাছে যখন তখন প্রয়োজনীয় এটা সেটা চাইতে থাকে। কিন্তু নজরুল বেকার মানুষ। আজও চাকরি হয়নি তার। বাবার সম্পত্তি ফেলে লেখাপড়া বউকে নিয়ে সময় পার করা এতেই পড়ে রয়েছে শহরে। সে টাকা পাবে কোথায় এত। গ্রামের সম্পদ অন্যদের মাঝে দিয়ে টাকা নিয়ে যা হয় তাই নিয়ে চলে। মাঝেমধ্যে ভাইয়ের কাছ থেকে টাকা নেয়। তাই বলে যখন তখন বউ বড় আকারে টাকা চাইবে সে কিভাবে দিবে। এই নিয়ে একটি পর্যায়ে নজরুল আর রিনার মধ্যে কথা কাটাকাটি সৃষ্টি হয়।
বিষয় | গল্প পোস্ট |
---|---|
গল্পের বিষয় | নজরুল এর জীবন কাহিনী |
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Huawei mobile |
ফটো এডিটিং | মোবাইল গ্যালারি সফটওয়্যার |
আমার ঠিকানা | গাংনী-মেহেরপুর |
ফটোগ্রাফার ও ব্লগার | @helal-uddin |
ধর্ম | ইসলাম |
দেশ | বাংলাদেশ |
পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়

হঠাৎ করে গল্পে চোখটা আটকে গেল।
ভাবলাম একটু মনোযোগ দিয়ে পড়ি সবটুকু পড়তে মাত্র দশ মিনিটের মতো সময় লেগেছে তবে গল্পটা অত্যন্ত সুন্দর এবং আমি খুব ভালোভাবেই উপলব্ধি করলাম এটা। যেহেতু ভালো লেগেছে তাই গতদিন পর্ব গুলো দেখবো ইনশাআল্লাহ
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আশা করি বাকিগুলা পড়বেন
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমার আজকের টাস্ক
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit