নিরামিষ রুই মাছের ঝোল।

in hive-129948 •  8 days ago 


কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


1000040855.jpg



আজকে আমি আপনাদের মাঝে যে রেসিপিটি শেয়ার করতে চলেছি এটি আমার বাড়ির সবার এবং বিশেষ করে আমার বর মশাইয়ের খুব পছন্দের একটি মাছের ঝোল। রান্নাটা আমি করে থাকলেও এই রান্নাটা শিখিয়েছে আমার বর নিজের হাতে। নিজের হাতে বলার কারণ প্রথমবার সে নিজে রান্না করেছিল এবং আমাকে শিখিয়েছিল পরবর্তীতে আমি এইভাবে রান্না করি। অতি সহজে ঝটপট কম সময়ের মধ্যে এই রান্নাটি হয়ে যায়। এবং মসলা ছাড়া স্বাস্থ্যকর হয়ে থাকে এই রান্নাটি। তবে খেতে অনেক বেশি সুস্বাদু লাগে। এই মাছের ঝোলের নাম আমি নিরামিষ মাছের ঝোল দিয়েছি যে কারণে সেটি হল, এই রান্নাটিতে কোন রকমের পেঁয়াজ, রসুন, আদা কিছুই প্রয়োজন হয় না। আর মাছটাকেই পুরো নিরামিষ এর মত করে রান্না করা হয়ে থাকে। আসল নাম হয়তো বেগুন দিয়ে মাছের ঝোল হতে পারে। তবে আমার এই রেসিপিটি নিরামিষ মাছের ঝোল বলতেই বেশি ভালো লাগে। তবে চলুন শুরু করা যাক আজকের নিরামিষ মাছের ঝোল।

1000040819.jpg


1000040822.jpg


-:মাছের ঝোল রান্নার উপকরণ:-

রুই মাছ
বেগুন
আলু
কাঁচা লঙ্কা
হলুদ
লবণ
সাদা তেল
চিনি

1000040825.jpg


1000040836.jpg


-:নিরামিষ মাছের ঝোল রান্নার পদ্ধতি:-



নিরামিষ মাছের ঝোল রান্না করার জন্য প্রথমেই আমার যে কয় টুকরো রুই মাছের প্রয়োজন সে কয় টুকরো মাছ নিয়ে নিয়েছি। এবার ভালো করে আঁশ ছাড়িয়ে পরিষ্কার জলে বেশ কয়েকবার ধুয়ে নিলাম। তারপর হলুদ লবণ মাখিয়ে রেখে দিলাম। অন্যদিকে নিয়ে নিলাম দুটো বড় আকারের বেগুন এবং একটি ছোট্ট আকারের আলু। আলু যেহেতু বাড়ির কেউ তেমন পছন্দ করে না তাই একটি আলু রান্নাতে দেব। পরিষ্কার করে জল দিয়ে ধুয়ে নিলাম দুটো বেগুন এবং আলু। আলুর খোসা না ছাড়িয়ে রান্না করবো তাই খোসা সহ ভালো করে পরিষ্কার জলে ধুয়ে নিলাম। এবার লম্বা লম্বা করে আলুটা খোসা সহ কেটে নিলাম। দুটো বেগুনই একটু মাঝারি আকারের চৌকো করে কেটে নিলাম। ৪-৫ টা কাঁচা লঙ্কা মাঝখান থেকে চিরে নিলাম। এ পর্যায়ে হয়ে গেল আমার প্রয়োজনীয় সব কাটাকুটি।

1000040830.jpg1000040828.jpg
1000040831.jpg1000040833.jpg



এবার আমি রান্না শুরু করব, একটি কড়াইতে একটু বেশি পরিমাণ তেল নিয়ে হলুদ মাখানো মাছগুলো সব একে একে ভেজে নিলাম। মাছ ভেজে তুলে নিলাম এবং কড়াই থেকে তেলের পরিমাণও কমিয়ে নিলাম। এক চামচ মত তেল রেখে বাকিটা তুলে নিলাম। লম্বা করে কেটে রাখা আলুর টুকরোগুলো ভেজে নিলাম। এবার অবশিষ্ট তেলে দিয়ে দিলাম অর্ধেক চামচ পরিমাণ মতো গোটা জিরে ফোড়ন। জিরেটা একটু ভাজা হয়ে সুগন্ধ ছাড়তেই দিয়ে দিলাম আলু, আলু দিয়ে একটু নাড়াচাড়া করে দিয়ে দিলাম কেটে রাখা বেগুনের টুকরোগুলো। এবার ভালো করেন দু তিনবার নাড়াচাড়া করে দিয়ে দিলাম পরিমাণ মতো হলুদ এবং লবণ। আবারো নাড়াচাড়া করে হলুদ ও লবণ ভালোভাবে বেগুন এবং আলুর সাথে মিশিয়ে দিলাম। ভালো করে মিশে গেলে একটি ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিলাম দু-তিন মিনিটের জন্য।

1000040834.jpg1000040840.jpg
1000040843.jpg1000040838.jpg
1000040848.jpg1000040850.jpg


দুই থেকে তিন মিনিট পর ঢাকনা তুলে একটু নাড়াচাড়া দিয়ে মনে হল আরেকটু ঢেকে দিলে ভালো হবে, এমন অবস্থায় চিরে রাখা কাঁচা লঙ্কা দিয়ে আবার দুই তিন মিনিটের জন্য ঢাকনা দিয়ে ঢাকা দিলাম। কিছুক্ষণ পর ঢাকনা খুলতে দেখতে পেলাম বেগুন এবং আলু প্রায় নরম হয়ে সেদ্ধ হয়ে এসেছে। একটু নাড়াচাড়া দিয়ে দিলাম এক চিমটি চিনি। অনেকেই রান্নায় চিনি ব্যবহার করে না কিন্তু আমার মনে হয় রান্নায় এক চিমটি চিনি ব্যবহার করলে রান্নার স্বাদ আরো বেড়ে যায় এবং সবকিছু সুন্দরভাবে ব্যালেন্স হতে পারে। চিনি দিয়ে আবারো একটু নাড়াচাড়া দিয়ে নিলাম। এবার পরিমাণ মতো জল দিয়ে আগুনের ফ্লেম জোরে দিয়ে জাল হতে দিলাম। বেশ কিছুক্ষণ জ্বাল হয়ে গেলে দিয়ে দিলাম ভেজে রাখা মাছের টুকরোগুলো। মাছের টুকরোগুলো দিয়ে আবারো বেশ কিছুক্ষণ জ্বাল দিতে লাগলাম। পরিমাণ মতো ঝোল চলে আসলে এবং রান্না সঠিকভাবে হয়েছে সেটা দেখেই জ্বাল বন্ধ করে দিলাম। পরিবেশনের জন্য তৈরি হয়ে গেল নিরামিষ মাছের ঝোল। এই গরমে এমন বিনা মশলায় রান্না করা এমন সুস্বাদু খাবার খেলে শরীর কখনোই অস্বস্তি লাগবেনা। বরং আরো শরীর সুস্থ অনুভব হবে।

1000040853.jpg


1000040854.jpg


1000040856.jpg


ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm



আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

1000040861.jpg

1000040860.jpg

1000040859.jpg

আপনার লেখা পড়ে খুব ভালো লাগল। কত আপনভাবে রান্নার গল্পটা বললেন! নিরামিষ মাছের ঝোলের আইডিয়াটা খুবই সুন্দর আর স্বাস্থ্যকরও। আপনার বর যেভাবে আপনাকে শিখিয়েছে, সেটা শুনে মনে হলো ভালোবাসা দিয়েই এই রান্নাটা তৈরি হয়। সহজ ভাষায় রেসিপি বলায় যে কেউ চাইলে বানিয়ে নিতে পারবে। আরো এমন গল্প আর রেসিপি শুনতে ভালো লাগবে।

আজকে আপনি আমাদের মাঝে নিরামিষ রুই মাছের ঝোল রেসিপি শেয়ার করেছেন।রেসিপিটি দেখে খুবই সুস্বাদু লাগছে! বিশেষ করে নিরামিষ ভার্সনে রুই মাছের স্বাদ ফুটিয়ে তোলার আইডিয়াটা অসাধারণ। আপনার প্রতিটি রেসিপি আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে। তাঁর কারণ আপনি আপনার রেসিপি গুলো অনেক সময় দিয়ে ধৈর্য ধরে তৈরি করেন এবং সেটা আমাদের মাঝে ধাপে ধাপে উপস্থাপন করেন। আপনার রেসিপিটি দেখে লোভনীয় লাগছে খেতে ও মনে হয় অনেক মজাদার হয়েছিল ধন্যবাদ আপু আপনাকে।

আপনার এই নিরামিষ রান্না রেসিপি দেখে অনেক ভালো লাগলো। কারণ এরকম কিছু কিছু নিরামিষ রান্না আছে যেগুলো খেতে অনেক ভালো লাগে। রেসিপি তৈরি করার ধরন আমার কাছে অনেক ভালো লাগলো। দেখেই অনেক লোভনীয় মনে হচ্ছে। এত সুন্দর করে এই রান্নার রেসিপিটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

পেঁয়াজ রসুন না দিলেও আমরা মাছ কে নিরামিষ বলিনা কারণ মাছ তো আমিষ যাই হোক সুন্দর হয়েছে রেসিপিটি। গরমে মসলা পরিহার করা দরকার তাই এই রেসিপিটি গরমের জন্য একদমই দরকারী। ধাপে ধাপে রন্ধন প্রনালী চমৎকার সুন্দর করে আমাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে লোভনীয় রেসিপিটি আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য।

এত লোভনীয় রেসিপি শেয়ার করেছেন দেখে অসম্ভব ভালো লাগলো। আপনার আজকের রেসিপিটা আমার তো দারুন পছন্দ হয়েছে। মজার মজার রেসিপি গুলো তৈরি করে মাঝেমধ্যে আমাদেরকেও কিন্তু দাওয়াত দিতে পারেন। তাহলে মজার মজার খাবারগুলো আমরাও খেতে পারতাম। এই রেসিপিটা দেখে অনেক সুস্বাদু বলে মনে হচ্ছে। সবাই মনে হয় মজা করে খেয়েছেন।