আসসালামু আলাইকুম,শুভ রাত্রি
হ্যালো বন্ধুরা,আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
আজ আবারও একটি গল্প নিয়ে চলে আসলাম। চলো শুরু করি---- নীল আর মায়া—নাম দুটো যেন ছিল একে অপরের হৃদয়ে লেখা চিরন্তন কবিতা। বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে প্রথম দেখা, বইয়ের পাতার ফাঁকে চোখাচোখি আর তারপর শুরু হয় ভালোবাসার নীরব গান। নীল ছিল অন্তর্মুখী, লেখালেখি ভালোবাসে। মায়া ছিল তার ঠিক উল্টো, প্রাণবন্ত, মঞ্চে উঠে কবিতা আবৃত্তি করে। ওরা একে অপরের বিপরীত হলেও, ঠিক সেখানেই ভালোবাসার মূল জায়গাটা ছিল—সম্পূরকতা।
চারটি বছর কেটে যায় স্বপ্ন বুনতে বুনতে। বিয়ের স্বপ্ন, সংসারের স্বপ্ন, আর একসাথে বুড়ো হওয়ার ইচ্ছা।কিন্তু হঠাৎ একদিন খবর আসে—নীলের বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। নীল পরিবারের একমাত্র ছেলে আর সেজন্য দায়িত্বের ভারে জর্জরিত হয় পড়ে। একরাশ শোক আর দায়িত্ব তার জীবন থেকে কেড়ে নেয় তার হাসি, সময় আর ধীরে ধীরে তার ভালোবাসাটাও।
মায়া প্রথমে বোঝে, অপেক্ষা করে। সে চিঠি লেখে, ফোন করে, কিন্তু প্রতিবারই নীল বলে— “অল্পদিনের কথা, মায়া। সময় হলেই সব ঠিক হবে। কিন্তু সময় ঠিক হয় না। অপেক্ষার সীমা থাকে, ভালোবাসারও ক্লান্তি আসে। একদিন মায়া বলে—“ভালোবাসা শুধু কথা নয়, ত্যাগেরও নাম। আমি অপেক্ষা করতে করতে নিজেকেই হারিয়ে ফেলছি, নীল।” এরপর এক দীর্ঘ নীরবতা… বছর পেরিয়ে যায়।
নীল তখন একটি স্কুলে শিক্ষকতা করে, রাতে কবিতা লেখে। মায়া এখন একজন সাহিত্যিক, নারী অধিকার নিয়ে কাজ করে। দশ বছর পর, এক সাহিত্য সম্মেলনে দেখা হয় তাদের। নীল কবিতা পড়ে—
“তুই আসবি জানতাম,
ঠিক যেদিন আমি আর বলার মতো কিছু রাখব না,
তোর চোখে জল দেখে বুঝব—
ভালোবাসা কখনও মরে না, হারিয়ে যায়।”
মায়া উঠে দাঁড়াল, চোখ ভেজা, ঠোঁটে এক অসমাপ্ত হাসি। তারা মুখোমুখি দাঁড়াল, কিন্তু এবার আলিঙ্গন নয়— দুজনেই একে অপরের চোখে খুঁজল সেই পুরোনো দিনগুলো, যা ছিল, কিন্তু আর কখনও হবে না। তারা চলে গেল—দুজন দুই দিকে। তবুও মায়ার মনে শুধু একটি কথাই বাজছিল: ভালোবাসা কেবল অনুভবের বিষয় নয়—এটা দায়িত্ব, সময়, আর শ্রদ্ধার সমন্বয়।
সময়মতো আগলে না রাখলে, গভীর ভালোবাসাও হারিয়ে যেতে পারে। প্রতিদিনের ছোট ছোট ব্যস্ততা, অপেক্ষা আর ভুল বোঝাবুঝিতে জীবনের বড় কিছু হারিয়ে যায়। ভালোবাসা থাকুক, তবে যত্ন নিয়ে। কারণ, ভালোবাসা একবার হারালে—সব ফিরে এলেও, সেই মানুষটা আর ফিরে আসে না।
আমার গল্প আজ এখানেই শেষ করলাম। যদি ভালো লাগে তাহলে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে জানিয়ে দেবেন। ধন্যবাদ সবাইকে♥️।
আমি তানজিমা। আমি একজন বাংলাদেশী। আমার মাতৃভাষা বাংলা বলে আমি নিজেকে নিয়ে অনেক গর্ববোধ করি। আমি ফিন্যান্স বিভাগ থেকে বিবিএ শেষ করেছি।
আমি ছবি আঁকতে, পড়তে, লিখতে ফটোগ্রাফি, রেসিপি এবং ডাই বানাতে খুব পছন্দ করি। আবার আমি ভ্রমণ বা ঘুরাঘুরি করতে খুব পছন্দ করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে খুব পছন্দ করি। আমি চেষ্টা করি সব সময় যেন নতুন কোনো কিছু করা যায়।






Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power



Comment link
Comment link
Comment link
Comment link
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit