হনুমান জয়ন্তী - শেষ পর্ব

in hive-120823 •  13 days ago 

নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। আজকে আমি আপনাদের সকলের সাথে হনুমান জয়ন্তীর শেষ পর্ব শেয়ার করতে চলেছি।

বলেছিলাম যে হনুমান জয়ন্তীর দিন মন্দিরে গিয়ে যখন দেখতে পেলাম, ব্রাহ্মণ আসেনি তখন আমরা আবার মার্কেটে দিকে চলে গিয়েছিলাম কেনাকাটা করতে। পরের দিন নীল পূজো থাকায়, বাজারেও যেতে হয়েছিল মায়ের দেওয়া লিস্ট ধরে কেনাকাটা করতে।

20250412_205111.jpg

সমস্ত কিছু শেষ করে আবার আমার ভাইয়ের সাথে বাইকে করে হনুমান মন্দিরে আসলাম। তখন দেখি প্রচন্ড ভিড় হয়ে গেছে। ব্রাহ্মণও চলে এসেছে। আমিও ভিড়ের মধ্যে দিয়ে কোন রকমে ঢুকে জায়গা বুঝে বসে পড়লাম। তখনো দেখছি ব্রাহ্মণ পূজোতে বসেনি। পূজার নৈবেদ্য ,ভোগের প্রসাদ সব রেডি হচ্ছে । এসব দেখে আবারও মাথাটা গরম হয়ে গেল, কারণ রাত অনেক হয়ে যাচ্ছে। আর আমি বুঝে উঠতে পারলাম না যে ,যতক্ষণ ব্রাহ্মণ আসেনি ,ততক্ষণ এই কাজগুলো এগোয়নি কেন এরা।

20250412_183556.jpg

সত্যি বলতে আমি আমার নিজেদের বারোয়ারির মন্দিরেও খেয়াল করেছি যে , মানুষজন কাজের সময় থাকে না ,তবে যখন প্রসাদ বিতরণ হয় ,তখন লোকের ভিড়ে মন্দিরে আর টেকা যায় না। কিন্তু একটা পুজো হলে যে একটু হাতে হাতে কাজ করে দেবে ,সেই মানুষের প্রচুর অভাব।

এত বড় পুজো ।কিন্তু কাজের লোকজনের অভাব। আমি গতবার যখন হনুমান মন্দিরে গিয়েছিলাম, সমস্ত ভোগের প্রসাদের জোগাড় আমি আর একটা জেঠু মিলে করছিলাম। সেদিনকে যদি সময় থাকতো এবং আমি জানতাম তাহলে অবশ্যই আগে গিয়ে কিছুটা হলেও জোগাড় করে দিতাম। জোগাড় করতে করতেই আধাঘন্টা পার হয়ে গেল।

20250412_191909.jpg

তারপর আস্তে আস্তে পুজো শুরু হল। প্রথমে মন্দিরে রাখা শিবলিঙ্গকে পুজো করা হলো। তারপর ওখান থেকে বেরিয়ে হনুমান মন্দিরের ভেতরে পুজো শুরু হলো। এবার ভাবছেন আমি অতক্ষণ ছিলাম কেন। আমি গিয়েছিলাম পুজো দেওয়ার জন্য। সবার নামে প্রসাদ কিনে নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু ওখানে গিয়ে পুরোহিত ঠাকুরের সাঙ্গোপাঙ্গ সকলে বলছিল, যা এনেছেন সব এই গামলাই ঢেলে দিন।

কথাটা হলো সব যদি ঢেলে দিই, তাহলে প্রসাদ হিসেবে নিয়ে যাব কি। আর অলরেডি তিনটে বাড়ির পুজো দায়িত্ব সহকারেই নিয়ে গিয়েছিলাম। তাই এইভাবে প্রসাদ রেখে চলে আসা যেত না। আর ওরা বলছিল পুজো না শেষ হওয়া অব্দি, কোনভাবেই ওরা কোন কিছু ফেরত দিতে পারবে না। সব থেকে বড় কথা আমাদের বাড়ির কাছে বলে আমি ওখানে চুপ করে বসে পড়েছিলাম। পুজো দেখতেও আমার ভালো লাগছিল। ব্রাহ্মণ যখন পুজোতে বসলো তার আধঘন্টা পরেই পুজো শেষ হয়ে যায়। তাই পুজোর জন্য বেশি লেট হয়নি। ব্রাহ্মণে র পুজোতে বসতেই যা দেরি হয়েছে।

20250412_194811.jpg

খুব যাক জমক ভাবে পুজো হলো। ভক্তি ভরে পূজো দিলাম।তবে বিরক্তিকর কিছু ব্যাপার ছিল। যারা পুজো দিতে আসছিল, তারা দেখতেই পাচ্ছে মন্দিরে কত ভিড়,তার পরেও ওই ভিড়ের মধ্যে মোমবাতি আর ধুপ জ্বালিয়ে ঢুকছিল। যদি কারোর গায়ে আগুন পড়ে, কি বড় দুর্ঘটনা ঘটবে! কেউ একবারও ভাবছিল না।

আমি যে কতবার কতজনকে বারণ করেছি, তার ঠিক নেই। তবু কেও শোনে না। আমার এতো রাগ ধরছিল ওই সময়, আমার সাথে সাথে পাশে বসে থাকা কাকিমারাও অনেক প্রটেস্ট করলো। তবে গিয়ে কেউ কেউ মোমবাতি আর ধুপ জালানো বন্ধ করল। আমার কথা হল মোমবাতি আর ধুপ বাইরে থেকে জ্বালিয়ে আরতি করে বাইরে রেখে দিলেই তো হয়,ভেতরে ভিড়ের মধ্যে আনার কোন প্রশ্নই ওঠে না।।

IMG-20250421-WA0004.jpg

যাইহোক পুজো শেষ হওয়ার পর তো একদিকে প্রসাদ নেওয়ার জন্য লাইন পড়ে গেল। আমি ওদিকে পুরোহিত ঠাকুরের সাংগো পাঙ্গদের সাথে কথা বলে বাড়ির প্রসাদ গুলো চেয়ে নিলাম। আর তারপরে বাড়ির দিকে রওনা হলাম।

আশা করছি আমার আজকের পোস্ট আপনাদের সকলের ভালো লেগেছে। সকলে সুস্থ থাকুন। সকলের সমস্ত বাধা-বিপত্তি দূর হোক, এটাই প্রার্থনা করি।।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...
Loading...

Joy maa 🙏