নমস্কার বন্ধুরা। আপনারা সকলে কেমন আছেন? আজকে আবারো চলে এসেছি আপনাদের সাথে নতুন একটি বিষয় শেয়ার করার জন্য। আশা করছি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।
জীবনে সফলতা অর্জন করার জন্য অধ্যাবসায় হল একটি গুরুত্বপূর্ণ চাবিকাঠি। নিরবচ্ছিন্নভাবে কোনো কাজ করার মধ্যে দিয়েই সেই কাজেই সফলতা অর্জন করা সম্ভব। তবে এই অধ্যাবসায় খুব সহজ নয়। নিয়মিত একই কাজ ক্রমাগত চর্চার মাধ্যমেই এই সফলতা আসে। তাই বলা যায় অধ্যবসায়ের এই পথ একটি দীর্ঘ যাত্রা। অধ্যবসায় মানে হলো লক্ষ্যে অবিচল থেকে সমস্ত প্রতিকূলতাকে জয় করে নিয়মিত চর্চা করা। এই অধ্যবসায়ের কাজে ভীষণ পরিমাণে ধৈর্য্য থাকা প্রয়োজন।
এই অধ্যবসায়ের অভাবে কিন্তু আমরা জানা জিনিসও ভুলে যাই। একজন খুব প্রতিভা সম্পন্ন মেধাবী ছাত্র কিন্তু অধ্যবসায়ের অভাবে তার মেধা হারিয়ে ফেলতে পারে।। আবার একজন কম মেধাবী ছাত্রও কিন্তু অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে একজন মেধাবী ছাত্রের সমতুল্য হয়ে উঠতে পারে। আমি এরকম বেশ কিছু মানুষকে চিনি যারা হয়তো প্রাথমিক কিংবা মাধ্যমিক স্কুলে পড়াকালীন পড়ার বিষয়ে খুব বেশি সিরিয়াস ছিল না। তবে পরবর্তীকালে বোধ বুদ্ধির বিকাশের সাথে সাথে তারা এ বিষয়টাকে অনেক বেশি সিরিয়াসলি গ্রহণ করে এবং অধ্যবসয়ের মাধ্যমে তারা তাদের জীবনে সফলতা অর্জন করেছে। আবার এমন অনেক পরিচিত মানুষ আছে যারা প্রথম দিকে দারুন মেধার পরিচয় দিলেও পরবর্তীকালে একাগ্রতা ও অধ্যবসায়ের অভাবে তাদের মেধা ক্ষুন্ন হয়েছে।
ইতিহাস ঘাটলে এমন অনেক উদাহরণ পাওয়া যাবে যা আপনাকে চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দেবে যে অধ্যবসায় মানুষের জীবনে ঠিক কতটা প্রয়োজন। স্যার থমাস এডিসন এর কথা কি মনে পড়ছে! শুনেছি, তিনি নাকি ইলেকট্রিক বাল্ব তৈরি পড়ার সময় প্রায় ১০০০ বার ব্যর্থ হয়েছিলেন। তবুও তার কাজের প্রতি একাগ্রতা, ভালোবাসা ও অধ্যবসায়ই কিন্তু শেষমেশ তাকে সফলতার দোড় গোড়ায় পৌঁছে দেয়।
যেকোনো কবি, সাহিত্যিক কিংবা বিজ্ঞানী কেউই কিন্তু একদিনে নিজেদেরকে তৈরি করেনি। একটা ভালো কবিতা কিংবা সাহিত্যিক রচনা লেখার জন্য তাকে প্রচুর অধ্যাবসায় করতে হয়েছে। অপরদিকে একজন বিজ্ঞানী অধ্যবসায় ছাড়া কখনোই নতুন কিছু আবিষ্কার করতে পারেন না। তাই যে কোনো ক্ষেত্রেই সফলতা অর্জন করার জন্য তাকে অবশ্যই অধ্যবসায় করতে হবে। পরিশ্রম, মনোযোগ , চেষ্টা, কাজের প্রতি ভালোবাসা ইত্যাদির মাধ্যমেই কিন্তু একজন ব্যক্তি প্রত্যহ অধ্যবসায় করতে পারে।
আমরা সব সময় বলে থাকি ছাত্র জীবন হল আমাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। আর এই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় কে আরো অনেক বেশি ফলপ্রসূ করে তোলা সম্ভব অধ্যবসায়ের মাধ্যমে। একজন ছাত্রের উচিত প্রতিদিন সঠিক সময়ে ঘুম থেকে উঠে পড়াশোনা করা এবং নিয়মিত শরীর চর্চা করা ও সুঅভ্যাস গঠন করা। প্রতিনিয়ত অধ্যবসায়ের মাধ্যমে সে অবশ্যই এগুলোকে গ্রহণ করতে পারে। যার ফলে তার পরীক্ষার ফলাফলও খুব ভালো আসে। অন্যদিকে একজন ছাত্র যে কিনা কোন রকম অধ্যবসায় করেনা তার রেজাল্ট কখনোই ভালোবাসা সম্ভব নয়।
এই অধ্যাবসায় শুধুমাত্র শিক্ষিত ব্যক্তিদের জন্যই নয়। সমাজের যে কোন শ্রেণীর মানুষের জন্যই অধ্যাবসায় খুব গুরুত্বপূর্ণ। একজন চাষি ফলনের আশা ছাড়াই প্রতিনিয়ত তার র চাষ করা গাছগুলো যত্ন নেয় এবং সেগুলোকে স্বস্নেহে বড়ো করে তোলে। যার ফলে তার ক্ষেত ফসলে ভরে ওঠে।
উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা এটা বলতেই পারি যে আমাদের ভবিষ্যৎ জীবনকে অনেক বেশি সুন্দর করে গড়ে তোলার জন্য অধ্যাবসায় আবশ্যিক। এই অধ্যাবসায় ছাড়া কোনভাবেই জীবনে সফল হওয়া সম্ভব নয়।
আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।