নমস্কার বন্ধুরা। আপনারা সকলে কেমন আছেন? আজকে চলে এসেছি আপনাদের সাথে নতুন একটি রেসিপি শেয়ার করতে। আশা করছি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।
বেশ কয়েক মাস আগেই আমি আপনাদের সাথে কচু লতি দিয়ে একটি রেসিপি শেয়ার করেছিলাম। যেখানে আমি সরষে দিয়ে কচু লতি তৈরি করেছিলাম। তবে সেই পোস্টে অনেকেই কমেন্টের মাধ্যমে জানিয়েছিলেন তারা তাদের বাড়িতে চিংড়ি মাছ দিয়ে কচু লতি খেয়ে থাকেন। তাই মনে মনে ভেবে রেখেছিলাম একদিন বাড়িতে চিংড়ি মাছ দিয়ে কচুর লতি, রান্না করবো। আজ ঘরে চিংড়ি মাছ ও কচুর লতি দুটোই যেহেতু ছিল, তাই ভাবলাম আজকেই আপনাদের সাথে এই রেসিপিটি শেয়ার করা যাক।
কচু লতি খেতে আমরা সকলেই কমবেশি ভালোবাসি। কচুর লতি তে কিন্তু প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান বর্তমান রয়েছে। এতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি ইত্যাদি রয়েছে, যা আপনি আমাদের শরীরের পক্ষে খুবই উপযোগী। আর এই কচু লতি এক একজন একেক রকম ভাবে রান্না করে থাকেন। তবে যেভাবেই রান্না হোক না কেন আমার কিন্তু কচুর লতি ভীষণ পছন্দের। রেসিপিটি দেখে অবশ্যই জানাবেন আপনারাও কি আপনাদের বাড়িতে একই পদ্ধতিতে কচুর লতি রান্না করেন!
চলুন তাহলে জেনে নিই আমি কিভাবে চিংড়ি মাছ দিয়ে কচুর লতি বানিয়েছিলাম----
|
---|
নং | সামগ্রী | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | কচুর লতি | ১ গোছা |
২ | সর্ষের তেল | ১০০ গ্রাম |
৩ | লবণ | পরিমাণ মতো |
৪ | পেঁয়াজ | ২ টো মাঝারি সাইজের |
৫ | আদা | পরিমাণ মতো |
৬ | রসুন | পরিমাণ মতো |
৭ | কালো জিরে | সামান্য |
৮ | হলুদ | পরিমাণ মতো |
৯ | কাঁচা লঙ্কা | পরিমাণ মতো |
১০ | চিংড়ি মাছ | ১০০ গ্রাম |
১১ | জল | ছোট বাটির এক বাটি |
১২ | লঙ্কার গুঁড়ো | এক চামচ |
|
---|
ধাপ ১ :
প্রথমেই কচু লতিগুলোকে খুব ভালোভাবে ছাড়িয়ে কেটে নিয়েছিলাম এবং ভালোভাবে ধুয়ে নিয়েছিলাম।
ধাপ ২ :
এরপর চিংড়ি মাছগুলোকে ভালোভাবে বেছে নিয়েছিলাম ও ধুয়ে তার মধ্যে লবণ ও হলুদ দিয়ে মাখিয়ে রেখেছিলাম।।
ধাপ ৩ :
এরপর কড়াই গরম হয়ে এলে তার মধ্যে দিয়ে দেবো পরিমাণ মতো সরষের তেল। তেল গরম হয়ে গেলে তার মধ্যে দিয়ে দেব লবণ হলুদ মাখিয়ে রাখা চিংড়ি মাছগুলো। চিংড়ি মাছ ভাজতে বেশি সময় লাগে না, ২ মিনিটের মধ্যেই চিংড়ি মাছ গুলো ভাজা হয়ে যাবে। একটি অন্য পাত্রে সেগুলো তুলে রাখবো।
ধাপ ৪ :
এরপর দুটো মাঝারি সাইজের পেঁয়াজ কুচি কুচি করে কেটে নেব এবং স্বাদ অনুযায়ী কয়েকটি কাঁচালঙ্কা কেটে নেব। সেই সাথে পরিমাণ মতো রসুন,আদা ও কাঁচা লঙ্কার একটা পেস্ট বানিয়ে নেব।
ধাপ ৫ :
এরপর চিংড়ি মাছ ভাজা তেলের মধ্যেই আরো কিছুটা সর্ষের তেল দিয়ে দেব। এরপর তার মধ্যে একে একে দিয়ে দেবো পরিমাণ মতো কালোজিরা, কুচি কুচি করে কেটে রাখা পেঁয়াজ ও লঙ্কা।
ধাপ ৬ :
এরপর তার মধ্যে দিয়ে দেবো সামান্য লবণ। লবন দিলে পেঁয়াজগুলো খুব তাড়াতাড়ি নরম হয়ে আসে। লবণ দিয়ে কিছুক্ষণ ভেজে নেব।
ধাপ ৭ :
এরপর তার মধ্যে কেটে রাখা কচুর লতিগুলো দিয়ে দেব। তার মধ্যে স্বাদমতো লবণ দিয়ে দেব। একটু নাড়াচাড়া করে একটা ঢাকনি দিয়ে ঢেকে দেবো। তাহলে কচুর লতি গুলো একটু নরম হয়ে আসবে।
ধাপ ৮ :
বেশ কিছুক্ষণ ঢাকা চাপা দিয়ে ভেজে নেব। ঢাকনা দেওয়ার ফলে কিছুক্ষণ পরে দেখা যাবে কচুর লতি থেকে খানিকটা জল বেরিয়ে এসেছে। এই জলেরই কচু লতি গুলো সামান্য সিদ্ধ হয়ে যাবে। এরপর কচু লতি গুলো সরিয়ে মাঝে একটু জায়গা করে নেব। তারপর সেখানে দিয়ে দেবো রসুন,আদা ও কাঁচা লঙ্কার পেস্ট। এরপর ভালোভাবে মিশিয়ে নেব।
ধাপ ৯ :
মসলা দেওয়ার পর বেশি যখন নাড়াচাড়া করে তার মধ্যে একে একে দিয়ে দেবো পরিমাণ মতো হলুদ ও লঙ্কার গুঁড়ো। তারপর আরো বেশ কিছুক্ষণ ভেজে নেব।
ধাপ ১০ :
এরপর তার মধ্যে দিয়ে দেবো ভেজে রাখা চিংড়ি মাছ এবং খুব ভালোভাবে কচুর লতির সাথে চিংড়ি মাছগুলোকে মিশিয়ে নেব।
ধাপ ১১ :
এরপর কচু লতি গুলো আরো একটু নরম হওয়ার জন্য দিয়ে দেব এক বাটি জল। এরপর ঢাকনি দিয়ে ঢাকা দিয়ে হাই ফ্রেমে জলটাকে শুকিয়ে নেব। মাখো মাখো হয়ে এলে নামিয়ে নেব। তাহলে রেডি হয়ে যাবে আমাদের চিংড়ি মাছ দিয়ে কচুর লতি।
ফাইনাল লুক.....
এক কথায় অসাধারণ খেতে হয়েছিল। এটা শুধুমাত্র আমি বলিনি, আমাদের বাড়ির যারা যারা খেয়েছিল সকলেই এই রান্নার খুব প্রশংসা করেছে। তাই আপনারাও চাইলে আপনাদের বাড়িতে এই রেসিপিটি অবশ্যই ট্রাই করতে পারেন। আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি, আগামীকাল আবার অন্য কোন লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব, সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
আমি এর আগে কখনোই কচুর লতি সেভাবে খায়নি। কিন্তু বেশ কিছুদিন হলো মায়ের হাতে কচুর লতি খেতে খেতে যেন অভ্যাস হয়ে গেছে। আমাদের বাড়িতে সেভাবে প্রচুর লতি রান্না করা হয় না কিন্তু মায়ের কাছে গেলেই মা মাঝে মাঝেই কচুর লতি রান্না করে করে খাওয়ায়। আসলে এই কচুর লতি খাওয়াটা মা অভ্যেস করিয়েছে। বেশ ভালই লাগিয়ে খেতে। তুমিও আজকে সেই সুন্দর রেসিপিটি শেয়ার করেছো। প্রত্যেকটা উপকরণ ও ছবিসহ ধাপে ধাপে শেয়ার করার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit