Guava Juice (পেয়ারার জুস 🥤) ও আইসক্রিম

in hive-120823 •  17 days ago  (edited)

নমস্কার বন্ধুরা। আপনারা সকলে কেমন আছেন? আজকে আবারো চলে এসেছি আপনাদের সাথে নতুন একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য। আশা করছি এই গরমে এটি আপনাদের জন্য উপকারী হবে।

আমরা সকলেই কমবেশি পেয়ারা খেতে ভালবাসি। কিন্তু কখনো কখনো এমন হয় যে বাজার থেকে কিনে আনা পেয়ারা ঘরে থেকে পেকে যায়। আর আমরা যারা কাঁচা ডাঁসা পেয়ারা খেতে ভালবাসি, তারা অনেকেই পাকা পেয়ারা খেতে চাই না। ফলস্বরূপ পাকা পেয়ারাগুলো আমাদের ফেলে দিতে হয়। আপনারাও কি আমার সাথে একমত?

আমাদের বাড়িতেও মাঝেমধ্যেই এইরকম দেখা যায়। পহেলা বৈশাখের দিন দোকানে দোকানে এমনকি বাড়িতেও লক্ষ্মী-গণেশ পুজো দেওয়া হয়। আমার শ্বশুরবাড়িও যেহেতু ব্রাহ্মণ পরিবার তাই আমার শ্বশুরমশাই পুজো করেন। পুজো করে যে ফল পেয়েছিলেন তার মধ্যে অনেকগুলোই পেয়ারা ছিল। কিছু পেয়ারা খাওয়া হয়েছিল আর কিছু ঘরে থেকে পেকে গিয়েছিল। তাই ভাবলাম পেয়ারাগুলো পেলে না দিয়ে বরং তার থেকে একটা জুস বানানো যাক। আজকাল ফেসবুক কিংবা ইউটিউব খুললে এই ধরনের জুসের রেসিপি অনেক দেখতে পাওয়া যায়। তবে আগে কখনো আমি এই রেসিপি বাড়িতে ট্রাই করিনি। তাই ভাবলাম ফলগুলো ফেলে না দিয়ে বরং একবার ট্রাই করেই দেখি। তাই আজকে বানিয়ে ফেলেছিলাম healthy and tasty Guava Juice ।

1000247174.jpg

তাছাড়া পেয়ারাতে প্রচুর পুষ্টিগুণ রয়েছে। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। পেয়ারা খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়, হার্ট ভালো থাকে, রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রিত হয়। এছাড়াও google এ সার্চ করলে পেয়ারা আর বহু গুণাগুণ আপনারা জানতে পারবেন। তাই এত উপকারী একটি ফল ফেলে না দিয়ে আপনার বাড়িতে এটা একবার অন্তত ট্রাই করতে পারেন। ব্যক্তিগতভাবে এর স্বাদ কিন্তু আমার ভীষণ ভালো লেগেছে।

চলুন তাহলে জেনে নিই আমি কিভাবে পাকা পেয়ারা দিয়ে জুস বানিয়েছিলাম----

1000247015.jpg

উপকরণ

নংসামগ্রীপরিমাণ
পাকা পেয়ারা২ টো
চিনিস্বাদ অনুযায়ী
লবণপরিমাণ মতো
বিট লবণপরিমাণ মতো
বরফ/ঠান্ডা জলপরিমাণ মতো
লেবু১ টা

1000246996.jpg

প্রস্তুতি

ধাপ ১:

প্রথমে পেয়ারা গুলোকে ভালোভাবে ধুয়ে ছোট ছোট করে কেটে নিয়েছিলাম।

1000246998.jpg

ধাপ ২:

এরপর পেয়ারাগুলোকে মিক্সারের বাটির মধ্যে নিয়ে তার মধ্যে সামান্য জল অ্যাড করেছিলাম। তারপর একটা মিহি পেস্ট বানিয়ে নিয়েছিলাম।

1000247000.jpg

ধাপ ৩ :

পেস্ট টা যেহেতু অনেক ঘন হবে তাই তার মধ্যে এক গ্লাস জল মিশিয়ে নিয়েছিলাম। তারপর জলের সাথে পেস্টটা ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়েছিলাম যাতে খুব সহজেই পেস্ট টা থেকে পাল্পটা ছেঁকে নেওয়া যায়।

1000247002.jpg

ধাপ ৪ :

এরপর একটা ছাঁকনির সাহায্যে পেস্ট টা থেকে বীজগুলোকে বাদ দিয়ে দেব। ছাঁকনির থেকে খুব ভালোভাবে ছাঁকা যায় চালুনির সাহায্যে। ছাঁকনিতে অনেক সময় লাগছিল তাই আমিও বেশিরভাগ পেস্ট টা চালুনির সাহায্যেই ছেঁকে নিয়েছিলাম। তাহলেই আমরা একটা ফাইন পেস্ট পেয়ে যাব।

1000247004.jpg

ধাপ ৫ :

এরপর ওই পেস্টের মধ্যে একে একে দিয়ে দেবো পরিমাণ মতো তিনি, বিটনুন , সাধারণ লবণ ও একটা লেবুর রস।

1000247006.jpg

ধাপ ৬:

সমস্ত উপকরণগুলো ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে তার মধ্যে দিয়ে দেবো পরিমাণমতো জল। আমি খুব বেশি পাতলা করতে চাইনি তাই অল্প পরিমাণ জল ব্যবহার করেছি। আপনারা চাইলে পাতলাও করতে পারেন। তবে আমার মনে হয় ঘনত্ব একটু বেশি রাখলে টেস্টটা অনেক বেশি ভালো লাগবে।

1000247008.jpg

ধাপ ৭:

যেহেতু গরমকালে আমরা একটু ঠান্ডা পানীয় খেতেই বেশি ভালোবাসি তাই সবশেষে এর মধ্যে দিয়ে দেবো কয়েকটি আইস কিউব বা বরফের টুকরো। তাহলে রেডি হয়ে যাবে আমাদের হেলদি অ্যান্ড টেস্টি Guava juice 🥤।

1000247010.jpg

ফাইনাল লুক-----

1000247016.jpg

এখানেই শেষ নয়। আমাদের বাড়ির ছোট সদস্যের আর্জি ছিল তাকে আইসক্রিম বানিয়ে দিতে হবে। তাই সে নিজে থেকেই ঘর থেকে আইসক্রিমের ডাইস এনে বলে,"পিন, আমাকে আইসক্রিম বানিয়ে দাও না।" এত কিউট করে বললে না বানিয়ে থাকা যায়! তাই ওই জুস দিয়েই বানিয়ে দিয়েছিলাম আইসক্রিম।

প্রথমে ওই ডাইসগুলোর মধ্যে জুসটা ঢেলে দিয়েছিলাম। এই মুহূর্তে ভাইপোর সে কি আনন্দ। কিন্তু আমার বেশ ভয় করছিল, কারণ ও পেয়ারা খেতে তেমন ভালো বাসে না। পেয়ারার ফ্লেভারের আইসক্রিম খেতে কেমন হবে এই নিয়ে আমার মনেও সংশয় ছিল। যাইহোক, যেহেতু ও আইসক্রিম বানানোর জন্য খুব বায়না করছিল তাই আইসক্রিমের ডাইসগুলোতে জুস ঢেলে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিয়েছিলাম।

1000247012.jpg

এরপর সকাল বেলায় ও স্কুলে গিয়েছিল আর আমি পড়াতে চলে গিয়েছিলাম। দুপুরবেলা ফ্রিজ থেকে বের করে ওকে একটা দিয়েছিলাম। তবে টেস্ট নিয়ে কোনো কমপ্লেইন না করলেও ওর মনটা বড্ড খারাপ হয়ে গেছিল কারণ ও তো ছোটো, তাই ভেবেছে আইসক্রিমের ডাইসগুলোর যেরকম কালার হয় হয়তো আইসক্রিম গুলোও সেই রঙেরই হবে। তবে সাদা রং দেখে ও খুব দুঃখ করে বলল, "ও পিন, এগুলো কালারিং হলো না কেন?"তাই ভেবেছি, পরে একদিন অন্য কোন রঙিন ফল দিয়ে ওকে আইসক্রিম বানিয়ে দেব।

1000247014.jpg

আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোন লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

পাকা পেয়ারা আমি মোটেও খেতে পারি না তবে কাঁচা পেয়ার া আমি লবণ মরিচ মাখিয়ে খেতে অনেক বেশি পছন্দ করি কাঁচা পেয়ারা আপনি লবন মরিচ মাখিয়ে যত খাবেন তত কিন্তু আপনার জন্য বেশ ভালো হবে তবে আজকে আপনি আমাদের সাথে পাকা পেয়ারা দিয়ে জুস এবং আইসক্রিম কিভাবে তৈরি করতে হয় সেই বিষয়টা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। যেটা দেখতে অনেক বেশি লোভনিও দেখাচ্ছে ইনশাল্লাহ অবশ্যই একদিন তৈরি করে খাওয়ার চেষ্টা করব ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।

আমি কাঁচা পেয়ারা খেতে ভীষণ ভালোবাসি। কিন্তু কখনই পাঁকা পেয়ারা খায় না। তবে পেয়ারা দিয়ে জুস তৈরি করার আইডিয়াটা বেশ ভালো লাগলো পাকা পেয়ারা দিয়ে যে জুস তৈরি হয় সেটা একদমই জানা ছিল না। অনেক সময় বাড়িতে পাকা পেয়ারা থাকলে ফেলে দেওয়া হয়। তোমার এই পাকা পেয়ারার জুস তৈরি কিংবা আইসক্রিম দুটোই খুবই কাজে লাগবে আমার। পাকা পেয়ারা জুস ও আইসক্রিম দুটোই পদ্ধতি উপকরণের সাথে ছবিসহ খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছে। সুন্দর জুস তৈরি তুলে ধরার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

পাকা পেয়ারা খেতে আমার একদম ভালো লাগে না কাঁচা পেয়ারা খেতে আমার অনেক ভালো লাগে কাঁচা পেয়ারা সব সময় কাসুন্দি দিয়ে লবণ মরিচ দিয়ে আমি মাখিয়ে খেয়ে থাকি সত্যি আগে কখনোই জানতাম না আমরা যে পাকা পেয়ারাগুলো ফেলে দি সেই পেয়ারা দিয়ে যে এত সুন্দর জুস এবং আইসক্রিম বানানো যায় সেটা জানতাম না আপনি আমাদের মাঝে পাকা পেয়ারা দিয়ে জুস আইসক্রিম কিভাবে বানাতে হয় সেটা বানিয়ে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন আসলেই অনেক লোভনীয় লাগছে অবশ্যই বাসায় বানানোর চেষ্টা করব অসংখ্য ধন্যবাদ ভালো থাকবেন