ব্যান্ডেল এ অবস্থিত লাহিড়ী বাবার আশ্রমের কিছু ছবি।

in hive-120823 •  2 years ago  (edited)
IMG_20230102_165053.jpg
(লাহিড়ী বাবার আশ্রম)

প্রিয় বন্ধুরা,
নতুন বছর আসতে না আসতেই একটা দিন অতিবাহিত হয়ে গেছে, সময় কত দ্রুত এগিয়ে চলেছে এর থেকেই প্রমাণিত।

জীবনের কোনো কিছুই পড়ে থাকে না বা অপেক্ষায় থাকে না, সময়ের স্রোত তাকে বিয়ে নিয়ে যায় দুর থেকে দুরস্ত এবং সময়ের সাথে সাথে কিছু স্মৃতি বিস্মৃত হয়ে যায় জীবনের পাতা থেকে আর কিছু থেকে যায় চিরস্মরণীয় হয়ে।

IMG_20230102_164919.jpg
(রাম, লক্ষ্মণ ও সীতা)

এমনটা কেবল একজনের ক্ষেত্রে নয় সকল মানব জাতির ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। কথায় কথায় জানতে চাওয়া হলো না, বছরের শুরুর দিনটি সকলের কেমন কেটেছে!

আশাকরি আনন্দের মধ্যেই অতিবাহিত হয়েছে আপনাদের সকলের দিনটি। রবিবার রাতে আমি আর আমার এক সহকর্মী রাজিব ঠিক করেছিলাম পয়লা জানুয়ারি আমরা দুজনে কাছাকাছি কোথাও একটা যাবো।

বাঙালি তো, কাজেই না চাইলেও ছোটো খাটো অন্ধ বিশ্বাসের প্রতি সুপ্ত একটা গররাজি ইচ্ছে রয়েই যায়।

আমি আগেই জানিয়েছি, কোনো ধর্মস্থানে বেড়াতে গেলে আমার মূল লক্ষ্য বা আকর্ষণ থাকে সেখানে স্থাপত্য এবং ঠিক সেই কারণে আমি অনেক সময় মন্দিরের অভ্যন্তরে না গিয়ে আশেপাশের নির্মিত বিষয়বস্তু বেশি উপভোগ করি।

এটি একান্তই আমার ভাবনা, কারোর সাথে বচসায় যায়নি এই নিয়ে কখনো, বিশ্বাস যার যার, তার তার; এখানে কাউকে জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার কিছু নেই।

অভ্যন্তরীণ ভাষ্কর্যের নিদর্শন:-

IMG_20230102_165119.jpg

IMG_20230102_165008.jpg

IMG_20230102_164945.jpg

কাজেই রাজীবের প্রস্তাব মত, ব্যান্ডেল অবস্থিত লাহিড়ী বাবার আশ্রম দেখতে যাওয়া হবে সেই মতোই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।

জায়গাটি বাড়ি থেকে খুব বেশি দূরে নয়, কাজেই দু'চাকার গাড়ি নিয়ে অবলীলায় ঘুরে আসা যায়। এমনিতেই এখন ছুটি পাবার সম্ভবনা নেই, তাই গিয়ে দিনের দিন ফিরে আসার মত জায়গাই খোঁজা হচ্ছিল।

সেইমত শেষ মেষ লাহিড়ী বাবার মন্দিরকেই নির্বাচন করা হলো, সকলের প্রাতঃরাশ সেরে প্রায় সকাল ১০টা নাগাদ রওনা দিয়েছিলাম।

রাস্তায় সব বনভোজনগামী বাস, অন্যান্য গাড়ি পাশ দিয়ে লারে পাপ্পা গান বাজাতে বাজাতে বেরিয়ে যাচ্ছিল।
খোলা গাড়ির পিছনে নব প্রজন্মের উদ্দাম নৃত্য চোখে পড়লো, আমরাও বেশ তাড়িয়ে তাড়িয়ে বিষয়গুলো উপভোগ করতে করতে পৌঁছলাম মন্দিরে।

আরও বেশ কিছু ছবি অভ্যন্তরীণ মন্দিরের:-

IMG_20230102_164859.jpg

IMG_20230102_164835.jpg

IMG_20230102_164809.jpg

জানা গেলো ভোগের সময় বেলা ১২টা নাগাদ, বেশ কিছু নিয়মাবলীর মধ্যে মেয়েদের চুল ঢেকে মন্দিরে প্রবেশ সহ, ছিল হাঁটুর নিচ পর্যন্ত পোশাক পড়বার বিধি, নইলে মহিলারা প্রবেশ করতে পারবেন না।

কিন্তু পুরুষদের ক্ষেত্রে সেসকল নিয়মের বালাই নেই, সমাজব্যবস্থার নানান নিদর্শন সর্বত্রই চোখে পড়ে।

হিন্দু দেবতাদের মহা সম্মেলন চোখে পড়লো, কেউ বাদ নেই সেখানে, কিন্তু আমার যেটা ভালো লেগেছে সেটা বলি।

আমার ভালো লেগেছে সেখানে শান্ত পরিবেশ, ও স্থাপত্য। বিভিন্ন গাছ গাছালির উপস্থিতি সহ আকর্ষণের বিষয় সেখানে বৌদ্ধ মূর্তি, তার চারপাশের তৈরি স্থাপত্যের নিদর্শন।

মন্দিরের প্রবেশ দ্বার সহ বৌদ্ধ মূর্তির সামনে তৈরি ভাস্কর্য:-

IMG_20230102_165032.jpg

IMG_20230102_164747.jpg

ছবি দেখলেই কিয়দাংশ আপনারা বুঝতেই পারবেন, আসলে কোনও স্থানের পবিত্রতা বজায় রাখতে সেখানের পরিবেশ একটা বড়ো ভূমিকা পালন করে বলে আমি বিশ্বাস করি।

একজন সেবায়ত লাহিড়ী বাবার ইতিহাস শোনাচ্ছিলেন উপস্থিত ভক্তদের কিন্তু আমি সেসব দিকে যায়নি, তবে আমি এটা কিছুটা বিশ্বাস করি বছরের শুরুর দিনটি যতটা সম্ভব আনন্দের সাথে কাটানোর চেষ্টা করা উচিত আর ঠিক সেই কারণে আমার সেখানে যাওয়া।

তবে বাবার গল্পের চাইতেও আমার ভালো লাগা জড়িয়ে ছিল সেখানের তৈরি বিভিন্ন মূর্তি, ভাষ্কর্যের প্রতি।

যাইহোক সর্বমোট দিনটি কাল ভালোই কেটেছে সেটাই সবচাইতে বড়ো প্রাপ্তি, আপনারাও জানাতে ভুলবেন না আপনারা বছরের প্রথম দিনটি কিভাবে কাটিয়েছেন, মন্তব্যের মাধ্যমে।

আজ এই পর্যন্তই এসে ইতি টেনে বিদায় নিলাম, ভালো থাকুন সবসময় ভালো কাটুক আপনাদের গোটা বছর এই কামনা করি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

বেশ কিছু নিয়মাবলীর মধ্যে মেয়েদের চুল ঢেকে মন্দিরে প্রবেশ সহ, ছিল হাঁটুর নিচ পর্যন্ত পোশাক পড়বার বিধি, নইলে মহিলারা প্রবেশ করতে পারবেন না।

এটি আমার কাছে একেবারেই নতুন একটি তথ্য। এর আগে মন্দিরের ঢোকার ক্ষেত্রে এমন নিয়মের কথা আমি শুনিনি। তবে এতে আমার বিশেষ আপত্তি নেই। কারন আজকালকার মেয়েরা আধুনিকতার মোড়কে নিজেকে এতটাই মুড়ে নিয়েছে যে, জায়গা বিশেষে পোশাক পরিধান করা উচিৎ সেটাই ভুলে গেছে।

আমাদের কাছাকাছি এতো সুন্দর মন্দির আছে সত্যিই আমার জানা ছিলোনা। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর করে লেখা ও ছবির মাধ্যমে মন্দিরটি পরিদর্শন করানোর জন্য।

ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। নতুন বছর অনেক ভালো কাটুক।