"জীবনের নতুন অধ্যায়ে পদার্পন "

in hive-120823 •  yesterday 
IMG_20250504_231750.jpg

Hello,

Everyone,

মাঝখানে অনেকগুলো পোস্ট আমি পিকলুকে নিয়েই লিখেছি, কারণ মাঝের দিনগুলো ও ব্যতীত আমি আর অন্য কোনো কিছু নিয়ে লেখার মত মানসিক পরিস্থিতিতে ছিলাম না। এখনো যে আছি তেমনটা নয়।

তবে প্রতিদিন একই বিষয় সকলের পড়তে ভালো লাগবে না এটাই স্বাভাবিক। তাই আজ একটু ভিন্ন লেখা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। বেশ কিছুদিন আগে আপনাদেরকে জানিয়েছিলাম আমার দিদির ছেলে অর্থাৎ তাতান, ওর দিদি অর্থাৎ তিতলির স্কুলেই চান্স পেয়েছে। আর এই বিষয়টা নিয়ে ও ভীষন আনন্দিত ছিলো।

IMG-20250501-WA0004.jpg

তাই আজ ভাবলাম আপনাদের সাথে ওর স্কুলের যাওয়ার প্রথম দিনের গল্প শেয়ার করি। আজকের পোস্টে ব্যবহৃত ছবিগুলি আমার দিদি আমাকে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে পাঠিয়েছে। অনেকদিন হয়ে গেছে দিদির ফ্ল্যাটে যাওয়া হয় না, তবে ওদের দুই ভাই বোনের একসাথে স্কুলে যাওয়ার মুহূর্তগুলো সামনে থেকে উপভোগ করতে না পারলেও, ছবির মাধ্যমে দিদি আমাকে উপভোগ করার সুযোগ করে দিয়েছে। তাই ভাবলাম কিছুটা আনন্দ আপনাদের সাথেও শেয়ার করি।

সত্যি কথা বলতে দিদি আমার কাছে ছবিগুলো আগে পাঠিয়েছিল ঠিকই, তবে এর মাঝে ছবিগুলো তত ভালো ভাবে দেখা হয়ে ওঠেনি। এমনকি এই বিষয়ে দিদির সাথে কথাও বলিনি। তবে আজ সন্ধ্যার পর দিদি ফোন করেছিল তখনই ওর সাথে কথা হল।

IMG-20250501-WA0000.jpg

স্কুলে যাওয়ার আনন্দে তাতান আগের দিন রাতে ভালোভাবে ঘুমায়নি পর্যন্ত। রাতের বেলায় দু-তিনবার উঠে মাকে জাগিয়ে দিয়েছে, স্কুলে যেতে দেরি হয়ে যাবে এমনটা ভেবে। কিন্তু দিদি আবার ওকে বুঝিয়ে শুইয়ে দিয়েছে। যাইহোক এলার্ম বাজলে দুই ভাই বোনকে ডাকা লাগে নি। একবারেই দুজনে উঠে গিয়েছিলো। তারপর নিজেরাই ফ্রেশ হয়ে, ব্রাশ করে নেয়। তিতলি বরাবরই ছাতু খেয়ে স্কুলে যায়, তবে তাতান ছাতু খেতে একেবারেই পছন্দ করেনা, তাই দিদি ওকে শুধু দুধ আর চকোস দিয়েছিল।

IMG-20250501-WA0002.jpg

প্রথম দিন ছিলো, তাই দাদা ও দিদি ওদেরকে গাড়ি পর্যন্ত তুলে দিতে গিয়েছিলো। আমার বাবা বরাবরই তিতলিকে গাড়িতে তুলে দেয়, তবে এদিন যেহেতু দুই ভাই বোন একসাথে যাচ্ছিলো, তাই বাবার সাথে সাথে দাদা দিদি সকলেই ওদেরকে পুলকারে তুলে দিয়ে এসেছিলো। স্কুলে যাওয়ার জন্য তাতানের ভীষণ উত্তেজনা কাজ করছিল, যেটা খুব স্বাভাবিক।

সবথেকে যেটা শুনে ভালো লাগলো প্রথম দিনের স্মৃতি হিসেবে ওদের ক্লাস টিচার, ক্লাসের ভিতর বসিয়ে সকল বাচ্চাদের ছবি তুলে অভিভাবকদের কাছে পাঠিয়েছিলো। অনেকের অভিভাবক তাদেরকে স্কুলেও ছাড়তে এসেছিলো। তবে দিদির যেহেতু হসপিটালে যেতেই হতো, তাই দিদি আর তাতানের সাথে স্কুলে যেতে পারেনি। আর দাদার একার পক্ষে যাওয়া সম্ভব ছিল না। আমার মানসিক অবস্থার কথা ভেবে দিদি আর আমাকে যাওয়ার কথা বলেনি।

IMG-20250501-WA0005.jpg

স্কুল থেকে ফেরার পথে পুলকারে তাতান ঘুমিয়ে পড়েছিলো। এমনটা তিতলির সাথেও হতো। প্রথম প্রথম যখন স্কুলে যেতো ফেরার সময় গাড়ির মধ্যেই ঘুমিয়ে যেতো। তাই বেশিরভাগ দিন দাদা ওকে কোলে করেই বাড়িতে আনতো। তবে তিতলি এখন বিষয়টাতে অভ্যস্ত হয়ে গেলেও, তাতান প্রথম দিন বলে তেমনটা হতে পারেনি।

তবে গাড়ির ড্রাইভার, দাদার ফোনে আগে থেকেই ফোন করে দিয়েছিলো। তাই বাবা আগে থেকেই নিচে এসে দাঁড়িয়ে ছিল। তিতলি ভাইয়ের ব্যাগটা নিয়েছিলো আর বাবা তাতানকে কোলে নিয়ে তারপর রুমে গিয়েছিলো। দিদি হিসেবে তিতলিও বেশ দায়িত্ব নিতে শিখে গেছে, নিজের কোলে মাথা দিয়ে ভাইকে শুইয়ে তারপর নিয়ে এসেছে।

IMG-20250501-WA0001.jpg

ঘুম থেকে উঠে স্কুলের প্রথম দিনের আনন্দ নিয়ে মায়ের সাথে, বাবার সাথে প্রচুর গল্প করেছিলো তাতান। এমনকি সেই গল্পগুলো আমাকেও বলতে হবে,,এমন বায়না জুড়ে ছিলো, তবে দিদি ওদেরকে বুঝিয়ে বলেছিল পরে আমার সাথে কথা বলিয়ে দেবে।

সত্যি কথা বলতে পিকলুর কথা এখনো পর্যন্ত তিতলি বা তাতান কেউই জানে না। যদিও বা তাতান পিকলুকে ভয় পায় কিন্তু তিতলি পিকলুকে ভীষণ ভালবাসে, এই কারণে পিকলু নেই কথাটা শুনলে ওর বেশি খারাপ লাগবে ভেবেই, দিদি আর আলাদা করে ওকে কিছু বলেনি। যাইহোক দিদির সাথে ফোনে বেশ কিছুক্ষণ কথা হয়েছে।

তাতান এবং তিতলি সেই মুহূর্তে পড়তে বসেছিল বলে আর ওদের সাথে কথা হয়নি। তবে তাতানের স্কুলের প্রথম দিনের গল্প শুনতে বেশ ভালো লাগছিলো। সত্যি কথা বলতে আমরা যখন স্কুলে প্রথম পড়েছি তখন সমস্ত কিছুর আয়োজন এতো বেশি ছিল না। সেই প্রথম দিনের স্মৃতি যে ভীষণ স্পষ্ট ভাবে মনে আছে এমনটাও নয়।

আসলে এরকমই হয়, সময়ের সাথে সাথে আমাদের জীবনে অনেক কিছুর পরিবর্তন আসে। তবে হ্যাঁ নিজের ছোটবেলাটা অতো ভালোভাবে মনে না থাকলেও, তিতলি ও তাতানের ছোটবেলার মাধ্যমে নিজের ছোটবেলাকে উপভোগ করার চেষ্টা আমি বরাবর করি। যাইহোক তাতানের জন্য সবাই আশীর্বাদ করবেন, যাতে ও ভালো মানুষ হতে পারে।

কারণ আজকালকার দিনে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হতে হয়তো ততটাও কষ্ট করতে হয় না, যতটা বেশি কষ্ট করতে হয় একজন প্রকৃত মানবিক মানুষ হয়ে উঠতে। তাই আপনাদের সকলের আশীর্বাদ ওর জন্য প্রার্থনীয়।

সকলের সুস্থতা কামনা করে আজকের পোস্ট শেষ করছি। কেমন লাগলো পোস্ট পড়ে, অবশ্যই মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। ভালো থাকবেন সকলে। শুভ রাত্রি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

প্রথম বাচচার তুলনায় দ্বিতীয় বাচ্চা বিশেষ করে যে বড় ভাই -বোনদের নিয়মিত স্কুলে যেতে দেখেছে তার স্কুলে যাওয়ার প্রতি এক অদ্ভুত আকর্ষন থাকে।এটা আমি আমার নিজের ছোট ছেলের বেলায়ও দেখেছি ।অথচ বড় ছেলেকে স্কুলে দিতে যেয়ে অবস্থা খারাপ হয়ে যেত আমার।
স্কুলে যাতায়াতের পথে বাচ্চাদের ঘুম এক নিয়মিত ঘটনা ।আমার মনে পরে দুই ছেলে সমানে ঘুমিয়ে পরতো প্রায় দিনই ।
তাতানের স্কুল যাএার প্রথম দিনের আনন্দ দেখে খুব ভালো লাগলো।পিকলুর কথা ওদেরকে না জানিয়ে ভালো হয়েছে ।
তিতলি ও তাতান দুজনেই জীবনে ভালো মানুষ হয়ে উঠুক সৃষ্টিকর্তার কাছে এই প্রার্থনা করি।
তাতানের স্কুল যাওয়ার প্রথম দিনের আনন্দ আামাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।ভালো থাকবেন সবসময় ।