আসসালামুআলাইকুম/আদাব
কলারদীঘি গ্রামের নাম শুনলেই মনে পড়ে একরাশ শান্তি, সবুজ ধানখেত, আর সন্ধ্যাবেলার কাক ডাক। এই গ্রামে একটা জিনিস বিখ্যাত ছিল হাকিম চাচার লিচু গাছ। কী বলব! এমন লিচু গাঁয়ের আর কোথাও জন্মায় না। বড়, টসটসে, আর এমন মিষ্টি যে খেলে মুখে রস গড়িয়ে পড়ে। কিন্তু হায়! হাকিম চাচা ছিলেন একেবারে আঁটসাঁট মানুষ। তিনি নাকি বলেন,এই লিচুগুলা আমি আমার মেয়ের বাড়িকে পাঠাবো কাউকে দিব না।
তবে গ্রামের তিন দুষ্টু রত্ন আলিফ, মামুন আর হিমেল, তাদের চোখে এই লিচু গাছ যেন গুপ্তধনের খনি।ওদের প্ল্যান ছিল পরিষ্কার,এই বছর এক রাতেই গাছ হালকা করে দিবে, দিন ছিল জ্যৈষ্ঠের এক গরম বিকেল। তারা তিনজন বসে পুকুর পাড়ে প্ল্যান করছে,আলিফ বলল, শোন, আজ পূর্ণিমা। চাঁদের আলো থাকবেও, আবার ঘুমও গাঢ় হবে। মামুন বলল, আর আমি বিড়ালের ডাকা অনুশীলন কইরা ফেলছি।হিমেল চুপচাপ, তার দায়িত্ব ছিল গাছে ওঠা কারণ সে ছিল গাঁয়ের সেরা গাছে ওঠা এক্সপার্ট।
রাত ১টা। চাঁদের আলোয় গোটা গ্রাম স্নান করে যেনো সাদা আলোয়। তিনজন কালো জামা পরে, চোরের মত নিঃশব্দে হাঁটছে। আলিফ ঝুড়ি, মামুনের গামছা, আর হিমেলের কোমরে দড়ি বাঁধা।তারা দেয়াল টপকাতে গেলেই বিপত্তি। হিমেল লাফিয়ে উঠতেই তার পায়ে বাড়ির টিনের কৌটা লেগে গেল,টিন বেজে উঠল “টিং টাং টং”।তিনজন মুহূর্তে গা ঠাণ্ডা,মামুন কানে মুখে হাত দিয়ে চুপচাপ বলল,মিউউউউউউ…।
হাকিম চাচা নড়ে উঠলেন, কিন্তু আবার ঘুমিয়ে পড়লেন।
তারা গাছে উঠল, শুরু হলো অপারেশন লিচু। ঝুড়ি ভর্তি হচ্ছে, আর হিমেল হুড়হুড় করে গাছ থেকে লিচু ছিঁড়ে দিচ্ছে।ঠিক সেই সময় হাকিম চাচার কুকুরটা ঘেউ ঘেউ শুরু করল,চাচা এবার উঠে পড়লেন—রে! কারে দেখি!হঠাৎ সার্চলাইটের মতো টর্চ জ্বালিয়ে ধরলেন গাছের দিকে! আলো পড়তেই দেখা গেল, আলিফ গাছের ডালে, হিমেলের পিঠে ঝুলে আছে, আর মামুন নিচে দাঁড়িয়ে “মিউমিউ” করে ডাকছে।
চাচা বললেন,আল্লাহ! বিড়ালরে গাছে উঠাইছে কেডা?
তিনজন আর কিছু ভাবল না,ঝুড়ি ফেলে, গামছা পরে, এক ছুট!কিন্তু হিমেল গাছ থেকে লাফ দিতে গিয়ে জামায় আটকে পড়ে গেল। চাচা দৌড়ে এসে ধরতে গিয়েই পিছলে পড়লেন নিজেরই পেচান পানি ফেলার হাঁড়িতে।এই ফাঁকে তিনজন আবার পালালো,এবার সত্যিকারের চোরের মতো।
পরদিন সকালে কলারদীঘির বাজারে গুঞ্জন—চাচার গাছে ভূত চড়ছিল নাকি?না না, শুনছি নাকি বিড়াল গাছে উঠছে!
চাচা মুখ গোমড়া করে শুধু বললেন,জ্বীন-ভূত না হইলেও, এই লিচু চোরদের আমি একদিন ধরবই!তিনজন বন্ধু পুকুর পাড়ে বসে হাসছে, আর ঝুড়ির ভেতর থেকে শেষ একটা লিচু বের করে আলিফ বলল, এই লিচুটা হাকিম চাচার নামে উৎসর্গ করা যাক!
ধন্যবাদ সকলকে✨💖
ফোনের বিবরণ
ক্যামেরা | স্যামসাং গ্যালাক্সি |
---|---|
ধরণ | রাইটিং ✨ |
মডেল | এম-৩১ |
ক্যাপচার | @alif111 |
অবস্থান | সিরাজগঞ্জ -রাজশাহী- বাংলাদেশ। |
আমার পরিচয়
![]() |
---|
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit