পেছনের গল্প( পর্ব: ১২ )।।

in hive-129948 •  5 days ago 


আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।

আজ বৃহস্পতিবার, ১ লা মে ,২০২৫।

আমি @emon42.

বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে


1000578193.jpg


১৬ ই মার্চ শনিবার কলেজ থেকে বাড়িতে এলাম দুপুর ২ টার সময়। ততদিনে অবশ‍্য জেনে গিয়েছি করোনা ভাইরাস নামক কিছু পুরো বিশ্বে মহামারি এর সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশেও পাওয়া গিয়েছে কয়েকজন রোগী। বাড়িতে আসতেই টিভিতে একটা ব্রেকিং নিউজের দিকে নজর চলে যায়। নিউজটা ছিল এমন আগামী ১৮ মার্চ সোমবার থেকে বাংলাদেশের সব স্কুল কলেজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। প্রথমে নিউজ টা দেখে অনেক খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু বুঝতে পারিনি সেই খুশি অচিরেই আফসোসে পরিণত হবে। কারণ যতই দিন অতিবাহিত হচ্ছিল করোনা এর ভয়াবহতা বৃদ্ধি পাচ্ছিল। তার সাথে ছুটিও বৃদ্ধি পাচ্ছিল। কোনভাবেই আমাদের অপেক্ষার প্রহর শেষ হচ্ছিল না।

কলেজের বন্ধুদের সাথে কতদিন দেখা হয় না। আগষ্ট মাসের দিকে করোনার প্রভাব কিছুটা কমে এসেছিল। তবে সেটা স্কুল কলেজ খুলে দেবার মতো না। কিন্তু একদিন একটা নোটিশ আসলো। আমাদের কলেজে যেতে হবে একদিনের জন্য। কারণটা ছিল আমাদের উপবৃওির টাকা সংগ্রহ। তখন বিশ্বব‍্যাংক থেকে আমাদের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের প্রতি সেমিষ্টার প্রতি একটা অর্থ দেওয়া হতো। কলেজ থেকে ঘোষণা দেয় ১৮ আগষ্ট সবাই কলেজে এসে কলেজ থেকে কাঙ্ক্ষিত ডকুমেন্ট নিয়ে গিয়ে যেন টাকা টা সংগ্রহ করি। নিউজটা দেখে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিলাম। আমার ভাবতেই বেশ ভালো লাগছিল। যাক অবশেষে আবার ক‍্যাম্পাস টা দেখতে পারব।


1000578194.jpg


দীর্ঘ ৫ মাস পরে বন্ধুদের সাথে আবার দেখা হবে। ঐদিন সকালে তৈরি হয়ে ক‍্যাম্পাসে চলে গেলাম। আমার সাথে ছিল আমার বন্ধু তুহিন। এবং কলেজে গিয়ে দেখি ইকরা নাভিদ রাসেল সবাই চলে এসেছে। সবাইকে দেখে বেশ ভালো লাগছিল। অনেক দিন পর সবার সাথে দেখা। সবারই কিছু না কিছু পরিবর্তন হয়েছিল। তবে আমার খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। সেটা কোনকালেই না। পরিবর্তন বলতে আমি কিন্তু শারীরিক গঠন এর কথা বলছি। মাঠের মধ্যে সবাই বসে পড়লাম গোল হয়ে। শুরু হলো আমাদের আড্ডা। কতশত কথা মনে আসতে লাগল। তবে ঐদিন আমাদের সবার মধ্যে একটাই প্রশ্ন ছিল এই করোনা কবে শেষ হবে। আবার কবে আমরা ক‍্যাম্পাসে ফিরে আসতে পারব। আবার কবে শুরু হবে আমাদের সেই স্বাভাবিক জীবন।

তবে খুব বেশিক্ষণ আমরা আড্ডা দিতে পারিনি ঐদিন। যেহেতু তখন একটা নিয়ম মেনে চলা লাগছিল। একসঙ্গে আমাদের বসে থাকতে দেখে কলেজ কতৃপক্ষ বাঁধা দেয়। তাদেরও কোন দোষ ছিল। তখন সময় টাই ঐরকম ছিল। তারপর চলে গেলাম ব‍্যাংকে। টাকা সংগ্রহ করলাম। তবে সেটার মধ্যে আনন্দের চেয়ে আক্ষেপ ছিল বেশি। চলে আসার সময় সবার সাথে কথা বলে বিদায় নেই। আমরা সবাই এক মহাবিপদে ছিলাম। কেউই জানতাম না এই বিপদ থেকে কবে বের হতে পারব না। কেউই জানত না আবার কবে আমাদের দেখা হবে। এখন ছবি গুলো দেখলে ঐদিন ঐ মূহূর্তের কথা সবকিছু মনে পড়ে যায়। সময় কতই না দ্রুত চলে যায় ।



সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।



IMG-20231027-WA0008.jpg

Facebook
Twitter
You Tube



অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।


আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।





Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

Banner(1).png

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovUdcufHKutmnDv7XmQqPrB8fBXG7kzXLfFggSC6SoPdYYQg44yvKzFDWktyjCspTTm5NVQAdTm7UoN34AAMT6AoF.gif



Heroism_Second.png


1000561739.png


Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Daily task

1000578097.jpg

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.