হ্যালো বন্ধুরা!
আসসালামু আলাইকুম।
কেমন আছেন সবাই? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবানীতে আপনারা অনেক অনেক ভাল রয়েছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় বেশ ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে নজরুলের জীবন কাহিনী নামক গল্পের ষষ্ঠতম পর্ব শেয়ার করতে চলেছি। এই গল্পের মূল কাহিনী লোকের মুখ থেকে শোনা। আমি আমার মতো করে একটু সুন্দর রূপ দিয়ে সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করার চেষ্টা করব।
আলেয়াকে বাদ দিয়ে দেওয়ার জন্য মিনার বেশি কথা শুনতে হয়নি, তবে মিনার ছোট বোন রিনার সাথে নজরুলের বিয়ে দেওয়াতে মিনাকেউ কথা শুনতে হয়। নিজের বোনকে নিজের কাছে রাখার জন্য ছোট যা আলেয়ার জীবনটা ধ্বংস করে দেবরকে তালাক করা হয়েছে। অনেকে অনেক কথা বলতে থাকে। তোরা দুই বোন কখনো সুখী হবে না। আলেয়ার জীবনটা নষ্ট করাইছিস তোরা দুই বোনে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আলেয়ার জীবন ধ্বংস করার পিছনে ছিল খায়রুল। খাইরুলের লোভটা ছিল শ্বশুরের সকল জমিগুলো নিজের হাতে দখল করে নেওয়া। তাই সেক্ষেত্রে ছোট ভাই নজরুলকে বল হিসাবে ব্যবহার করছে। এদিকে নজরুলের বউ রিনা তো অহংকারী যেদি একটা বোকা মহিলা। সে দুলাভাইয়ের চালাকি বুঝতে পারে না। ডাক নিয়ে আড্ডা দিয়ে বেড়াতে পারলে সে খুশি। তাই সংসারের চিন্তা স্বামীর মায়া তার মধ্যে তেমন বেশি কাজ করে না। তার চিন্তা শহর থেকে ভালো ভালো শপিং করব। দামি দামি রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া করব। বন্ধু বান্ধবীদের সাথে আড্ডা দিয়ে বেড়াবো। তার এমন বিষয়গুলো নজরুল কিছুতে মেনে নিতে পারেনা। সে মনে মনে ভাবতে থাকে আমার আগের বউ অর্থাৎ আলেয়াই বেশ ভালো ছিল। আলেয়াকে যখন যেভাবে যা বলা হতো তখন সে সেগুলো শুনতে। আলেয়া খুবই স্বাভাবিক এবং সাদাসিদা মনের মেয়ে ছিল। আর যাই হোক নজরুল নিশ্চিন্তে থাকতো তার বউ তার কথায় উঠবস করে। কিন্তু রিনাকে বিয়ে করে তার মনের মধ্যে সব সময় টেনশন কাজ করে। স্বামীর অবাধ্য ভাবে শহরে চলাচল করে। না জানি সে কোন ছেলেমেয়েদের সাথে ওঠাবসা করে, না জানি কখন সে তার ইজ্জত বিলিয়ে বেড়ায়।
সে যদি খারাপ ছেলেদের সাথে ওঠাবসা করে নজরুল বুঝতে পারবে না এবং কিছু করার থাকবে না। তাই এমন কিছু মানসিক দুশ্চিন্তা নজরুলকে দিন দিন ক্ষতবিক্ষত করতে থাকে। নজরুল তার এই মনের কথা বলতে পারেনা কারো সামনে। এদিকে রিনা বুঝতে পারেনা স্বামীর মনের কথা। সে মনে করে লেখাপড়ার জীবনটা আড্ডা দিয়ে চলার সময়। তার অনেক মেয়ে বান্ধবী রয়েছে আবার ছেলে বন্ধু রয়েছে। এমন কিছু ক্লোজ বন্ধু রয়েছে যাদের সাথে সে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে চলাচল করে। এমনটা নজরুল দেখেছে। আবার নজরুলের কানেও এসেছে তার বউ এর চলাচল নিয়ে কথা। তাই এক পর্যায়ে নজরুল তার মেজো ভাই খায়রুল কে বলল সে শ্বশুরবাড়িতে ঘর জামাই থাকতে পারবে না। কিন্তু স্বার্থবাদী মেজ ভাই কিছুতেই বুঝলো না নজরুলের মনের কথা। সে চাপ সৃষ্টি নজরুলের উপর। নজরুল ভেবে দেখল গ্রামে থাকলে আলেয়ার বিষয় নিয়ে কথা উঠে। সব সময় রীনার মুখে ঘ্যান ঘ্যান শব্দ চলতে থাকে। বাধ্য হয়ে নজরুল শ্বশুরবাড়িতে ঘর জামাই থাকতে চলে যায়।
নতুন পরিবেশে নজরুল সেভাবে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারছে না। শুধুমাত্র রিনার প্রতি ভালোবাসা রয়েছে বলেই শ্বশুর বাড়িতে এসেছে সে। যাই হোক নতুন পরিবেশে দিন চলতে থাকলো নজরুলের। প্রথম অবস্থায় বেশ ভালো আদর যত্ন। কিন্তু দিন যত যেতে থাকলেও ততো নজরুল খেয়াল করে দেখলো রিনা তাকে এড়িয়ে এড়িয়ে চলছে। সে স্বামীর কথা মান্য করছে না। স্বামীকে বলে না বলে যখন তখন চলে যায় বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে অথবা কলেজের নাম করে বাইরে বের হয়ে যায়। এদিকে নজরুল মনকে শান্ত রাখতে একটু ভালো থাকতে যখন শ্বশুরের গ্রামের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করে আত্মীয়-স্বজনসহ অন্যান্য মানুষের সাথে দু একটা কথা হলে যে কোন মুহূর্তে মানুষে প্রশ্ন করে বসে তুমি আলেয়াকে তালাক দিলে কেন। তার অপরাধ ছিল কি ইত্যাদি। নজরুল এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পায় না। অনেক নিন্দুকেরা কটু কথা বলতে থাকে সে সমস্ত কথাগুলো মানুষের মাধ্যমে নজরুলের কানে আসে। নজরুল একাকী নিরালায় বসে থাকে এবং ভাবতে থাকে তার শান্তি কোথায়। আলিয়াকে বিয়ে করেছিল তখন ও শান্তি ছিল। কিন্তু তার ভাই বাড়িতে যাওয়ার পর থেকে যেন তার শান্তি হারিয়ে যেতে থাকলো। শত কষ্টের মাঝে আলেয়াকে ধরে রাখলেও হয়তো মনের শান্তিটা ঠিকই থাকতো। কিন্তু আলিয়াকে তালাক দেওয়ার পর রিনা কে বিয়ে করে তার মনের শান্তিটা যেন হারিয়ে গেছে। এভাবে নজরুল ভাবতে ভাবতে দিন দিন অসহায় হয়ে যেতে থাকলো এবং মানসিক ও শারীরিক দিক থেকে ভেঙে পড়তে থাকলো। কিন্তু কিছুতে রিনা স্বামীর প্রতি দয়াবান যত্নবান হলো না। সে যেন নজরুলকে বাবার বাড়িতে ঘরজামাই পেয়ে পুরুষ মানুষ হয়ে গেছে এমন অবস্থা। এভাবে দিন চলতে থাকলো। নজরুল সবকিছু বুঝতে শিখলো। একদিন হঠাৎ খবর আসলো আলেয়া দুনিয়া ছেড়ে চলে গেছে। সে দুনিয়া ছেড়ে যাওয়ার আগেও নজরুলের প্রতি ভালো লাগা ভালোবাসার কথা উল্লেখ করে গেছে। দিনের পর দিন নজরুল জানতে পারলো আলেয়া তাকে মনেপ্রাণে ভালোবাসতো সে ভুলে থাকতে পারতো না নজরুলকে। সেই গ্রামের অবুঝ মেয়েটা এতটা ভালোবাসা পেয়ে বসেছিল নজরুলের মাঝে, যে দুনিয়ার সব কিছুর বিনিময়ে নজরুলকে ভালোবেসে যাবে। নজরুল যখন তাকে আর মেনে নিল না শ্বশুর বাড়িতে ঘর জামাই চলে গেল সেই থেকে আলিয়া আরও ভেঙ্গে পরল খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিল। দিনের দিন আরো বেশি জিন্ন ছিন্ন হয়ে অতঃপর এক বছরের মধ্যে মারা গেল। এদিকে নজরুল ঘটনা শোনার পর অনেক মর্মাহত হলো। তাকে আরো বেশি মর্মাহত করে তুলতে লাগলো রিনার কার্যকলাপ। মনের মধ্যে কষ্টটা কাকে বলবে এমন লোক খুঁজে পায়না নজরুল। সে আলেয়াকে ছেড়ে দিতে চাইনি, তবুও বাধ্য হতে হয়েছিল। আজকে রিনা নজরুলের ঘাড়ে ওঠে বাঁদর নাচানো নাচাতে চেষ্টা করে, আবার অমান্য করে চলে। নজরুল মাঝে মাঝে মনে করে আমি জমিদারের সন্তান হলেও ঘরজামাই রূপে একজন চাকর। (চলবে)
বিষয় | গল্প পোস্ট |
---|---|
গল্পের বিষয় | নজরুল এর জীবন কাহিনী |
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Huawei mobile |
ফটো এডিটিং | মোবাইল গ্যালারি সফটওয়্যার |
আমার ঠিকানা | গাংনী-মেহেরপুর |
ফটোগ্রাফার ও ব্লগার | @helal-uddin |
ধর্ম | ইসলাম |
দেশ | বাংলাদেশ |
পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়
