গল্প :- ছোটকালের কিছু অভ্যাস বড় হল বাদ দেওয়া যায় না।

in hive-129948 •  15 hours ago 

ক্যানভা দিয়ে তৈরি,

হ্যালো বন্ধুরা,

সবাই কেমন আছেন। আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই অনেক ভাল আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর রহমতে খুবই ভাল আছি।আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি বাস্তব গল্প শেয়ার করব। আশা করবো গল্পটি আপনাদের ভালো লাগবে। আমাদের চারপাশে প্রায় বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। যেগুলো থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়ার অনেক বিষয় রয়েছে। এজন্য এই সকল বিষয়গুলো আপনাদের শেয়ার করলে আপনারাও অনেক কিছু শিখতে পারবেন। এমনকি অনেকগুলো বিষয় সম্পর্কে অবগত হবেন। এইজন্য আমি চেষ্টা করি বিভিন্ন বিষয়গুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরার জন্য। এখন মানুষের আসলে ভরসা নেই। একেকজন একেক ধরনের, এবং একেক জন একেক ধরনের মানসিকতার।

IMG-20250505-WA0000.jpg

আজকে আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করব বাস্তব একটি গল্প। আমাদের পাশের বাড়ির একটি মেয়ের জীবন কাহিনী আপনাদের মাঝে তুলে ধরব। মেয়েটির নাম হচ্ছে কাজল। কাজল প্রথম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত আমার সাথে একসাথে লেখাপড়া করেছে। আর কাজল আমার ক্লাসমেট এবং বাড়ির পাশে বাড়ি বিদায় আমার সাথে খুব ভালো সম্পর্ক। স্কুল জীবনে আমি কাজলদের বাড়িতে যেতাম আর কাজল আমাদের বাড়িতে আস্তেন। এবং কাজলের জীবন কাহিনী সব আমার জানা আছে। কাজলের বাবা বিদেশ থাকে। কাজলের জন্মগ্রহণ করার কিছু মাস আগে কাজলের বাবা বিদেশ গেল। কাজল তাদের পরিবারে একমাত্র মেয়ে। এবং তাদের পরিবার আর কোন ছেলেমেয়ে নেই।

কাজল পৃথিবীতে আসার পর থেকে তার বাবাকে দেখে নাই অনেক বছর ধরে। কারণ কাজলের বাবা বিদেশ যাওয়ার পর অনেক বছর দেশে আসলো না। কাজলকে তার মা মানুষ করতে লাগলো। যদিও কাজল এর বাবা বিদেশ থেকে প্রতি মাসেই টাকা দিতেন। আর কাজল সারাক্ষণ বাড়িতে তার মায়ের সাথে থাকতো। কাজল যখন সপ্তম শ্রেণীতে পড়ালেখা করে তখন তার বাবা দেশে আসলো। বাবা দেশে আসার পর থেকে কাজল তার বাবার সাথে মিশতেন না। এবং নিজের বাবাকে বাবাও বলে ডাকতেন না। কারণ ছোটকাল থেকে কাজল তার বাবাকে দেখে নাই এবং তাকে কখনো ডাকেও নাই। এই কারণে বড় হওয়ার পর তার বাবা আসার পরও তাকে বাবা বলে ডাকেন না।

যদিও এ নিয়ে আশেপাশে লোকগুলো কাজলকে অনেক কথা বলতো। মাঝেমধ্যে আমি নিজেও কাজলকে দুষ্টামি করতাম। তুমি তোমার বাবাকে বাবা বলে ডাকো না। এই কথা বললে কাজল কিন্তু অনেক কষ্ট পেতেন। এবং কাজল যখন দশম শ্রেণীতে পরতেন ওই সময়ও তার বাবাকে বাবা বলতেন না। তবে কাজলের বাবার অনেক কষ্ট এবং দুঃখ। কারণ তার একটি মাত্র মেয়ে তাকে বাবা বলে ডাকে না। আর কোন লোক জিজ্ঞেস করলে তোমার বাবা কোথায়। তখন সেই বলতো ঘরে বা দোকানে। কিন্তু সামনে থেকে বাবা ডাকতেন না। দশম শ্রেণী পড়া অবস্থায় কাজলের ভালো এক জায়গায় বিয়ে হল। বিয়ে হওয়ার পর তার বাবা যদি শ্বশুর বাড়িতে যেতেন।

তখন তার বাবাকে সালাম দিয়ে কথা বলতো। কিন্তু বাবা বলে ডাকতেন না। অনেকে মনে করলো বিয়ের পর কাজল তার বাবাকে বাবা বলে ডাকবে। কিন্তু বিয়ের পরও কাজল কখনো তার বাবাকে বাবা বলে ডাকেন নাই। পিছনে হয়তো বা জিজ্ঞেস করলে বাবা বলে কথা বলতে মানুষের সাথে। সামনে কখনো বাবাকে বাবা বলে ডাকেন নাই। তবে কিছু মাস আগে কাজলের বাবা মারা গেল। আর কাজলের বাবা মারা যাওয়ার পর কাজল তার বাবার জন্য অনেক কান্নাকাটি করতে লাগলো। মৃত্যুর পর বাবা বাবা বলে কাঁদতে লাগলো এবং বাবার জন্য আফসোস করতে লাগলো। অথচ জীবিত থাকা অবস্থায় কখনো বাবাকে বাবা বলে নাই।

তবে অনেকে বলে হয়তোবা ছোটকাল থেকে বাবা না থাকায় বা দূরে থাকার কারণে বাবা বলে ডাকে নাই বিধায়। বড় হয়েও তার বাবাকে সে বাবা বলে ডাকে নাই। হয়তোবা বাবা বলতে তার কাছে লজ্জা লাগতো। আর কাজল এর ভাবা মারা যাওয়ার পর বাবা বাবা বলে কাঁদতে লাগলো। আসলে কিছু কিছু মানুষের ছোটকাল থেকে অভ্যাস থাকে বড় হলেও সে অভ্যাস থেকে যায়। যেমন ঠিক কাজলের জীবন কাহিনীতে হয়েছে। কারণ বাবা জীবিত থাকা অবস্থায় অনেক চেষ্টা করেছে একবার বাবা বলে ডাক শোনার জন্য। আর কাজল লজ্জার কারণে কখনো বাবাকে বাবা বলে ডাকে নাই। এবং কাজলের বাবার অনেক কষ্ট ছিল মনে মেয়ের মুখে বাবা ডাক শুনবে। এই হচ্ছে একটি বাস্তব ঘটনা।

আমার পরিচয়

IMG_20221006_094439.jpg

আমার নাম মোঃ জামাল উদ্দিন। আর আমার ইউজার নাম @jamal7। আমি বাংলাদেশে বসবাস করি। প্রথমত বাঙালি হিসেবে আমি নিজেকে অনেক গর্বিত মনে করি। কারণ বাংলা ভাষা আমাদের মাতৃভাষা। তার সাথে ফটোগ্রাফি করা আমার অনেক শখ। আমি যে কোন কিছুর সুন্দরভাবে ফটোগ্রাফি করার চেষ্টা করি। তার সাথে ভ্রমণ করতেও ভীষণ ভালো লাগে। বিশেষ করে নতুন নতুন জায়গা ভ্রমণ করতে ভীষণ ভালো লাগে। তার সাথে লেখালেখি করতে ও ভীষণ ভালো লাগে। যে কোন বিষয় নিয়ে কিংবা যে কোন গল্প লিখতে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। আর সব সময় নতুন কিছু করার চেষ্টা। নতুন ধরনের কিছু দেখলে করার চেষ্টা করি।
35FHZ8gBpndbrF88KC8i6DmfoqNdVfSnhzJshZCJksDJs27YpCCUjp1oaP6ko3mLJbQtLE76ZKc5r3aFXKh8EK2Xg2XbxHP97436Dksrat...K3RRDcGvdyC6bx3TE39Zctd2ho1pJ1hm9nj6RC6gfhhSEVDEf6zHmiqsgBwDTEDG8onxfxrWKe5ZMmiwAvtnX6XvsCqykCT5aFqMFBq2wcdKNs74j1RgTuza3g.png

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjde9gvbjDSDFUe2t87sHycAo9yh4cXNBQ2uKuZLC2jPzA8Qx5HRSqkJDxCm2F1P...XMCuWWrUK8WEzc1spvbtGymKcxp9cSaiY7YD7nmGv2yy3TJjQK1R5Bx6mMsJqHLdPZ4gBXB1M3ZGWR3ESWZxh8hd9tvb68pfdL8xHrioiqDnHuRUqd8FYt5aog.png

ধন্যবাদ সবাইকে

IMG-20240904-WA0027.jpg

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

Screenshot_2025-05-05-15-28-14-746_com.coinmarketcap.android.jpg

Screenshot_2025-05-05-15-34-02-414_com.twitter.android.jpg

Screenshot_2025-05-05-17-29-59-646_com.twitter.android.jpg

Screenshot_2025-05-05-18-59-38-719_com.twitter.android.jpg

গল্পটি পারিবারিক সম্পর্কের জটিলতা ও শারীরিক উপস্থিতির অভাব কীভাবে মানসিক দূরত্ব তৈরি করে তা খুব স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। কাজলের ক্ষেত্রে ছোটবেলা থেকে বাবার অনুপস্থিতি শব্দের ব্যবহারেও প্রভাব ফেলেছে, যা আমাদের সমাজে অভিভাবক-সন্তান সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে ভাবায়।গল্পটি আমাদের শেখায় যে, ভালোবাসা বা সম্মান প্রকাশের জন্য 'সঠিক মুহূর্ত'-এর অপেক্ষা করা উচিত নয়।