জেনারেল রাইটিং:-" বেইমানকে দ্বিতীয়বার সুযোগ দেওয়া বোকামি"II written by @maksudakawsar II

in hive-129948 •  12 days ago  (edited)

আসসালামু আলাইকুম

কেমন আছেন সবাই? আশা করবো সবাই ভালো আছেন। সৃষ্টিকর্তার রহমতে আমিও আছি ভালোই। তবে ব্যস্ত এ নগরে কতটুকু সময় ভালো থাকতে পারবো সেটা বলা মুশকিল। শত ঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে কাটাতে হয় যান্ত্রিক জীবন। মাঝে মাঝে মনে হয় সব কিছুকে বন্ধ করে দিয়ে দূরে কোথাও সবুজ গাছের ছায়ায় নিজেকে একটু স্বস্থির ছায়া দিতে। কিন্তু ঐ যে বাস্তবতা, সেটা তো বড়ই নিষ্ঠুর আর নির্মম। কোন কিছুতেই ছাড় দিতে চায় না। সে যাই হোক বাবা । চলুন মূল পোস্টে ফিরে যাওয়া যাক।

প্রতিদিনই চেষ্টা করি আপনাদের মাঝে সুন্দর করে কিছু লিখে উপহার দেওয়ার জন্য। চাই চারদিকের মানুষগুলোর মধ্যে লুকিয়ে থাকা কষ্টগুলো কে আমার লেখার যাদুতে আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে। জানিনা কতটুকু আপনাদের মাঝে নিজের মনের কথা গুলো কে শেয়ার করতে পারি। আজ চেষ্টা করলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি জেনারেল রাইটিং শেয়ার করার জন্য। আশা করি প্রতিদিনের মত করে আমার আজকের জেনারেল রাইটিংটিও আপনাদের কাছে বেশ ভালো লাগবে।


Colourful Minimalist Quote Facebook Post (9).png

বিশ্বাস ও আস্থা মানুষের সম্পর্কের মূল ভিত্তি। আর এই বিশ্বাসের কারনেই সম্পর্ক টিকে থাকে যুগের পর যুগ। যখন কেউ সেই বিশ্বাস ভঙ্গ করে, তখন সম্পর্কের ভিত্তি দুর্বল হয়ে যায়। তার ভিতর তৈরি হয় বিশ্বাস ভঙ্গকারী মানুষটির প্রতি হাজারও কষ্ট। এমন হাজারও কষ্ট মানুষের ভিতরে তৈরি করে হতাশা আর একাকীত্ব। আর এই কারনে নিজেকে হতাশা আর আঘাত হতে বাচিঁয়ে রাখতে আমাদের কখনওই সেই বেইমান মানুষটিক দ্বিতীয়বার সুযোগ দেওয়া ঠিক হবে না। কারন একজন বেইমানের প্রতি দ্বিতীয়বার সুযোগ দেওয়া অনেক সময়ই বোকামি হতে পারে। যখন একজন মানুষ বিশ্বাসঘাতকতা করে, তখন তার জন্য দ্বিতীয়বার সুযোগ দেওয়া শুধু নিজের আত্মমর্যাদা ও সঠিক সিদ্ধান্তের প্রতি অবহেলা নয়, বরং এটি তার ভুলের পুনরাবৃত্তি করতে উৎসাহিত করা।

একজন বেইমানকে দ্বিতীয়বার সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্তের পিছনে নানা কারণ থাকতে পারে। যেমন সহানুভূতি বা ভালোবাসা। তবে এই সিদ্ধান্ত সবসময় সঠিক নয়। বেইমান যদি একবার বিশ্বাসঘাতকতা করে, তাহলে দ্বিতীয়বার সুযোগ দেওয়ার পরিণতি অনেক সময় খারাপ হয়। মানুষ যখন মিথ্যা বলে বা প্রতারণা করে, তখন তার চরিত্রের মধ্যে গভীর সমস্যা থাকতে পারে। একবার ভুল করলেই যদি তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়, তবে সে শিখবে না যে তার আচরণটি ভুল ছিল। একবার সুযোগ দিলে সে হয়তো ভাববে যে, তার আচরণ কোনো সমস্যার সৃষ্টি করেনি এবং পরবর্তীতে একই ভুল আবারও করবে। এটি তার চরিত্রের আরো অবনতি ঘটাতে পারে।

বেইমান যদি একবার বিশ্বাস ভঙ্গ করে তবে সে অপরাধের পুনরাবৃত্তি করতে পারে। যদি কেউ একবার মিথ্যা বলে, তবে তাকে দ্বিতীয়বার সুযোগ দিলে সে আবারও মিথ্যা বলবে এবং তার বিশ্বাসঘাতকতা আরও গভীর হবে। বেইমানকে দ্বিতীয়বার সুযোগ দিলে নিজের মূল্যবোধকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিতে হবে। প্রত্যেক মানুষের একটি মূল্যবোধ এবং সম্মান থাকা উচিত। দ্বিতীয়বার সুযোগ দেওয়ার ফলে আমাদের মধ্যে এক রকমের মানসিক অশান্তির সৃষ্টি হয়। এতে করে আমরা প্রতিনিয়ত ভয়ে থাকি কখন আবার আমাদের শান্তি বিঘ্নিত হয়। সারাক্ষন শুধু ভয় হয় এ কথা ভেবে যে বেইমান আবার কী করবে, আবার প্রতারিত হবো কিনা, এমন এক অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে।

একজন বিশ্বাসঘাতককে বারবার সুযোগ দেওয়ার ফলে নিজের সততা এবং আস্থা অনেক কমে যায়। যখন মিথ্যা বা বেইমানের কাছে মিষ্টি কথা শুনে তাকে আবার সুযোগ দেওয়া হয় তখন আমাদের দুর্বলতা প্রকাশ পায়। এছাড়াও, যখন একজন বেইমানকে দ্বিতীয়বার সুযোগ দেওয়া হয় তখন তাকে আরও শক্তিশালী এবং সাহসী করে তুলা হয়। যাতে করে তিনি দ্বিতীবার একই কাজ করতে পারে। এটা তাকে উৎসাহিত করে যে, সে যতবার মিথ্যা বলবে, প্রতারণা করবে, ততবার তাকে ক্ষমা করা হবে বেন এবং সে যে কোনো পরিস্থিতিতে আপনাকে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারবে।

তবে, যদি দ্বিতীয়বার সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমে সেই ব্যক্তি সত্যিই তার ভুল সংশোধন করে এবং ভবিষ্যতে সৎ এবং ন্যায়পরায়ণ হয়, তবে সেটি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই ধরনের পরিবর্তন ঘটে না। বেইমানদের প্রতি দয়াপরায়ণতা এবং পুনর্বিবেচনার প্রয়োজন হয়, কিন্তু প্রায়ই তা অতিরিক্ত নরম হৃদয় কিংবা অজ্ঞতার সামিল। কিছু লোক মনে করেন, "অভিযোগের মাধ্যমে কাউকে শাস্তি দেওয়া উচিত নয়, বরং তাকে সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমে তাকে ভাল পথে নিয়ে আসা উচিত।" তবে বাস্তবতা হলো, বেশিরভাগ সময় বিশ্বাসঘাতকতার জন্য কোনো মকাবিলা থাকে না। যদি আপনি বিশ্বাসঘাতকতাকে ক্ষমা করে তাকে সুযোগ দেন, তবে আপনি কেবল তাকে তার অপরাধের জন্য কোনো শাস্তি না দেওয়ার মাধ্যমে তাকে আরও বেশি সুযোগ দিচ্ছেন। এর ফলে, তার অপকর্মের কোনো ফলাফল থাকছে না এবং সে আরও বেশি দুর্বল, মিথ্যা ও প্রতারণামূলক আচরণে লিপ্ত হতে পারে। সবশেষে বলা যায় যে, বেইমানকে দ্বিতীয়বার সুযোগ দেওয়া একটি বোকামি হতে পারে যদি তা নিজের আস্থার এবং সঠিক সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে না করা হয়। তাই, কিছু মানুষকে কখনোই দ্বিতীয়বার সুযোগ দেওয়া উচিত নয়, কারণ তা কেবল তাদের স্বভাব বদলাবে না, নিজের আত্মমর্যাদাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

বন্ধুরা কেমন লাগলো আপনাদের কাছে আমার আজকের লেখাগুলো? আশা করবো প্রতিদিনের মত করে আজও আপনারা আমার লেখা পড়ে ‍মুগ্ধ হয়েছেন। আশা করবো মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন।

আমার পরিচিতি

আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।


3W72119s5BjVs3Hye1oHX44R9EcpQD5C9xXzj68nJaq3CeF5StuMqDPqgYjRhUxqFbXTvH2r2mDgNbWweA4YGBo825oLh4oqEqeynn5EZL11LdCrppngkM (1).gif

VOTE @bangla.witness as witness

witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_proxy_vote.png

1000206266.png

1000206267.png

❤️❤️ধন্যবাদ সকলকে❤️❤️

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

কাউকে দ্বিতীয় সুযোগ দেওয়ার আগে নিজের মান-সম্মান ও আবেগের মূল্যায়ন জরুরি। যদি দেখেন ক্ষমা করলে আপনার আত্মসম্মান ক্ষুণ্ণ হবে, তাহলে সেই সম্পর্ক পুনর্বিবেচনা করা উচিত। বিশ্বাসঘাতকতা শুধু একটি ভুল নয়, এটি একটি সিদ্ধান্ত যা পুনরাবৃত্তির ঝুঁকি রাখে।

ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।