আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার
আমি @monira999 বাংলাদেশ থেকে। আজকে আমি ভিন্ন ধরনের একটি পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এসেছি। মাঝে মাঝে লেখালেখি করতে অনেক ভালো লাগে। তাই নতুন কিছু লিখার চেষ্টা করি। আজকে আমি একটি ভিন্ন ধরনের পোস্ট আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করবো। আশা করছি আমার এই পোস্ট সবার ভালো লাগবে।
জীবন যেন এক খেলাঘর:

Source
জীবনের বহুটা কাল পরে এসেও কোথাও যেন জীবনের কাছে হেরে গেছে অদ্বিতীয়া। বড্ড ভালোবেসেছিল রাহুলকে। রাহুলও তাকে ভীষণভাবে ভালোবেসেছিল। পরিবারের অমতে গিয়ে রাহুল অদ্বিতীয়াকে বিয়ে করেছিল। ছোট্ট সুখের ঘরে ভালোবাসার কোন কমতি ছিল না। হয়তো বিলাসিতা ছিল না তবে দুজনের মাঝের ভালোবাসা তাদের সব কষ্টগুলো বিলীন করে দিয়েছিল। দেখতে দেখতে কেটে গেল বেশ কয়েকটা মাস। সময়ের সাথে সাথে যেন তাদের জীবনে অভাব নেমে এলো। টিউশনি করে মাত্র কয়েক টাকার বেতন পেতো রাহুল। তাই দিয়ে চলত দুই টুনা টুনির সংসার। হয়তো ভাগাভাগি করে খেয়ে পড়ে ভালোই যাচ্ছিল তাদের দিনগুলো।
রাহুলের সামান্য আয়ের উপর সংসার চলতো তাদের। হঠাৎ একদিন তাদের ঘরে খুশির খবর এলো। অদ্বিতীয়া মা হতে চলেছে। কিন্তু কেন জানি এই খবরে তারা দুজন খুব একটা খুশি হতে পারছে না। তাদের টানাটানির সংসারে নতুন অতিথি আসছে এটা তাদের জন্য খুব একটা খুশির কারণ ছিল না। মাত্র কয়েক টাকা বেতন পেয়ে টেনেটুনে সংসার চালাতে হয় এর মাঝে যদি নতুন কেউ সংসারে আসে তাহলে তো খরচা আরো বেড়ে যাবে। সবকিছু মিলিয়ে দুজনে খুশি হতে গিয়েও যেন আর খুশি হতে পারছে না। তবে কি আর করার তারা দুজনে সবকিছু মেনে নিয়েছে। কষ্টের মাঝেও তাদের অনাগত সন্তানকে পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে শুরু করেছে।
এভাবে দিন যেতে যেতে কখন যে নয়টি মাস পার হয়ে গেল দুজনে বুঝতেই পারেনি। অনেক কষ্টে অনাহারে দিন গিয়েছে তাদের। কিন্তু ভালোবাসা ছিল বড্ড বেশি। দেখতে দেখতে তাদের ঘরে জন্ম হয় ফুটফুটে একটি কন্যা সন্তানের। ছোট্ট মেয়েটির মুখের দিকে তাকিয়ে তারা যেন জীবনের সব কষ্ট গুলো ভুলে যেতে শুরু করেছিল। নাম রেখেছিল পরী। অদ্বিতীয়া আর রাহুলের মেয়েটি যেন দেখতে ঠিক পরীর মতই ছিল। সময় যত যেতে লাগলো পরী ততই বেড়ে উঠতে লাগলো। কিন্তু বয়সের তুলনায় পরীর চঞ্চলতা টা অনেকটাই কম ছিল। চিন্তায় পড়ে গেল অদ্বিতীয়া। কি করবে কিছুই বুঝে উঠতে পারছিল না। সময় যত যেতে লাগলো রাহুল এবং অদ্বিতীয়ার মাঝে ফাটল তৈরি হতে লাগলো।
রাহুল ছোটখাটো একটি চাকরি জুটিয়ে নিয়েছে। মোটামুটি বেতনের চাকরিতে ভালোই কাটছিল তাদের দিনগুলো। কিন্তু কেন জানি রাহুল ধীরে ধীরে বদলে যেতে শুরু করেছে। পরীকেউ খুব একটা ভালোবাসে না সে। অদ্বিতীয়ার সাথেও ভালোমতো কথা বলে না। অদ্বিতীয়া তারা মেয়েকে নিয়ে হন্যে হয়ে ডাক্তারের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরতে শুরু করে। পরীর মত মেয়েটার মুখে যে কোন ভাষা নেই। সে শুধু ফ্যালফ্যালিয়ে তাকিয়ে থাকে। অদ্বিতীয়া কিছুতেই মেনে নিতে পারছিল না বিষয়টা। অন্যদিকে রাহুল বিষয়টিতে তেমন সিরিয়াস ছিল না। পরীকে খুব একটা আদর করত না রাহুল। হয়তো তার অসুস্থতার জন্য সে বাবার ভালোবাসা হারিয়েছিল। একদিন রাহুল বলেই বসে পরী নাকি অদ্বিতীয়ার পাপের ফল। তাই সে এমন হয়েছে। এই কথা শুনে অদ্বিতীয়া সেদিনই পরীকে নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিল। অজানা উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েছিল।
সে ট্রেনের বগিতে উঠে পড়ে। অদ্বিতীয়া আর পরী জানতো না তাদের গন্তব্য কোথায়। বিনা টিকিটেই অদ্বিতীয়া ট্রেনে উঠে পড়েছিল। অবশেষে একজন বয়স্ক স্কুল শিক্ষিকার সাথে অদ্বিতীয়ার পরিচয় হয়। সবটা শুনে তিনি অদ্বিতীয়কে তার সাথে নিয়ে যায়। গ্রামের একটি স্কুলে পাঠদান করতে শুরু করে অদ্বিতীয়া। সামান্য কিছু বেতন পেতো সে। এ দিয়েই তার সংসার চলে যেত। পাশাপাশি দুই একটা টিউশনি করতো। যাতে পরীর ট্রিটমেন্ট করতে পারে অদ্বিতীয়া সফল হয়েছে। তার মেয়ে কথা বলতে পারেনি ঠিকই কিন্তু এখন সে একজন নামকরা ডাক্তার। কথা না বলতে পারলেও সে চিকিৎসায় ভীষণ দক্ষ। তার কথাগুলো রোগীকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য সে একজন ভালো অ্যাসিস্ট্যান্ট রেখেছিল। যেই মেয়েটির চিকিৎসার জন্য তার মা ডাক্তারের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছে সেই মেয়েটি আজ একজন নামকরা ডাক্তার। সেদিনের পর থেকে রাহুলের সাথে আর কখনোই যোগাযোগ রাখেনি অদ্বিতীয়া। ভুল মানুষকে ভালোবেসে ছিল সে। তাই তো সেই ভুল সিদ্ধান্ত আজও তাকে কষ্ট দেয় জীবন সত্যিই এক খেলাঘর।
আমি মনিরা মুন্নী। আমার স্টিমিট আইডি নাম @monira999 । আমি ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি। গল্প লিখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। মাঝে মাঝে পেইন্টিং করতে ভালো লাগে। অবসর সময়ে বাগান করতে অনেক ভালো লাগে। পাখি পালন করা আমার আরও একটি শখের কাজ। ২০২১ সালের জুলাই মাসে আমি স্টিমিট ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু করি। আমার এই ব্লগিং ক্যারিয়ারে আমার সবচেয়ে বড় অর্জন হলো আমি "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির একজন সদস্য।
https://x.com/Monira93732137/status/1915711780585627722?t=He-TlkJZYhSrp9OBVQIwQQ&s=19
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার গল্পটা পড়ে অনেক ভালো লাগলো। অদ্বিতীয়া অনেক ভালো একটা কাজ করেছে রাহুলকে ফেলিয়ে এসে।কারণ যে স্বামী তার সন্তানকে এমন কথা বলতে পারে তার আর কি করার থাকে। যাইহোক অদ্বিতীয়ার কষ্টের ফল পেয়েছে এটাই অনেক। আজ তার মেয়ে বড় ডাক্তার। ধন্যবাদ আপু সুন্দর লিখেছেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
https://x.com/Monira93732137/status/1915746202051813411?t=KFHeOmO8J7InqL77H3xgPw&s=19
https://x.com/Monira93732137/status/1915768847338029429?t=Bxl9tEqw6Yh_9FWnt2E9tg&s=19
https://x.com/Monira93732137/status/1915769427569557950?t=AGUEVR9ivBIRanh3lZ0Ucw&s=19
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit