দিদি বাড়ি ঘুরতে যাওয়া। পর্ব-৪ দিদির ছাদ বাগান।

in hive-129948 •  7 days ago 


কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


1000034444.jpg



আগের দিন আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম আমার দিদির ছাদ বাগানের কিছু ফুলের গাছ এবং সেইসব গাছে ফুটে থাকা অনেক সুন্দর সুন্দর ফুলের কিছু ফটোগ্রাফি। আজকে এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদের কাছে শেয়ার করব আমার দিদির ছাদ বাগানের কিছু ফল এবং সবজির গাছ এবং কাহিনী। আসলে আমার দিদি অনেক পরিশ্রম করে এই ছাদ বাগানটি তৈরি করেছে তাই আমার কাছেও অনেক বেশি পছন্দ দিদির এই ছাদ বাগানটি। অনেক ফুলের পাশাপাশি দিদি অনেক সবজি এবং ফলের গাছও লাগিয়েছে। যদিও এই সবজি এবং ফলের গাছগুলোর মধ্যে কেনা খুবই কম গাছ। কারণ কেনা গাছের ফলন কতটা কি ভালো হবে সে ব্যাপারে দিদির যথেষ্ট সন্দেহ ছিল। তাই সবসময় দিদি চেষ্টা করত নিজে পরক করে দেখে শুনেই প্রত্যেকটা গাছ লাগানোর। অযথা গাছ লাগিয়ে ছাদের জায়গা নষ্ট করার কোন মানেই হয় না। তাই প্রয়োজনীয় ছাড়া কোন গাছ দিদি লাগায় না। দিদি একদিন বাড়ির নিকটবর্তী একটি নার্সারিতে গিয়েছিল কোন গাছ কেনা যায় নাকি বা নতুন কোন গাছ আছে নাকি সেটা দেখার জন্য। তখন সে দেখে একটি ক্যাপসিকাম গাছ রয়েছে যাতে খুব ভালো ফলন দেবে বলে দাবি নার্সারির মালিকের।

1000034448.jpg

1000034452.jpg



দিদিও ভাবলো ক্যাপসিকাম যেহেতু মাঝেমধ্যে রান্নায় প্রয়োজন পড়ে আর সেটা যদি নিজের গাছের হয় তাহলে অনেক ভালো হবে তাই কয়েকটা ক্যাপসিকাম গাছের ছোট চারা কিনে নিয়ে এসেছিল। যে গাছগুলোতে বর্তমানে ছোট ছোট ক্যাপসিকাম দেখা যাচ্ছে। গাছ লাগিয়ে তাতে ফলন দিলে বেশ ভালোই লাগে দেখতে। এছাড়াও একটি সবেদা গাছ কিনে এনেছিল যাতে ছোট্ট ছোট্ট সবেদা হয়েছে। তবে সব থেকে ভালো যে গাছটি সেটি হল লেবু গাছ। একটি পাতিলেবুর ছোট চারা গাছ দিদি কিনে এনেছিল রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ভ্যানের উপর থেকে। লোকটি বলেছিল অনেক ভালো ফলন দেবে এই লেবু গাছে। সত্যি ১২ মাসের লেবু গাছ এটি, সারা বছরই একদিকে লেবু পাকতে থাকে আরেক দিকে ছোট ছোট লেবু হয়ে থাকে এবং অন্য কিছু ডালে দেখা যায় ফুল আসছে। সারাবছর লেবু কিনে খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। ছোট চারাটি একটু বড় হতেই সেই যে ফলন দেওয়া শুরু করেছে প্রায় এক বছর ধরে ফলন দিয়েই চলেছে। দিদি বাজার থেকে পাকা টমেটো কিনে এনে রান্নার জন্য টমেটোগুলো কাটছিল তখন হঠাৎ করে কি মনে হল টমেটোর দানাগুলো অর্থাৎ ভেতরে যে জলটা থাকে এবং ছোট ছোট বীজ থাকে সেগুলোকে একটি বাটিতে রেখে দিল।

1000034450.jpg


1000034446.jpg



পরবর্তীতে সেগুলো একটু টবের মাটিতে দিয়ে এসেছিল। ভেবেছিল যদি গাছ হয় হবে আর যদি না হয় না হবে খুব একটা ব্যাপারটা নিয়ে ভাবনা চিন্তা করেনি। তবে প্রতিদিন নিয়ম করে জল অবশ্যই দিত সেই টবের মধ্যে। কিছুদিন পরে দেখলো ছোট্ট ছোট্ট চাড়া বেরিয়ে এসেছে সেই বীজ থেকে। বর্তমানে সেই গাছে ফুল ফুটেছে এবং কোন কোন গাছে আবার ছোট্ট টমেটো দেখা যাচ্ছে। এমন ভাবেই দিদি কুমড়োর বীজ এবং উচ্ছের বীজ রেখে ছাদের টবে গাছ লাগিয়েছে। আর এখন দেখছি সেই গাছগুলো অনেক বড় হয়ে গেছে এবং তাতেও টুকটাক ফলন দেওয়া শুরু করেছে। দিদির তো ইতিমধ্যে কুমড়োর ফুল দিয়ে বড়া ভেজে খাওয়া হয়ে গেছে। আবার এদিকে যখন দু একটা উচ্ছে হয় তখন উচ্ছে দিয়েও কিছু একটা রান্না করে খায়। আমাদের বাড়িতে যেহেতু প্রচুর পুঁইশাক গাছ আছে তাই আমি দিদিকে বেশ কিছু পুঁইশাক দিয়েছিলাম রান্না করে খাওয়ার জন্য। এবং তার সাথে পুই ফল অর্থাৎ মিচুড়ি দিয়েছিলাম যখন মিচুড়ি পুঁইশাক গাছে হয়েছিল। দিদি সেই পাকা মিচুড়ি একটি টবে লাগিয়ে রেখেছিল পুঁইশাক গাছ হওয়ার জন্য। আর বর্তমানে দেখা যাচ্ছে সেই পুঁইশাক গাছগুলো মোটামুটি একবিগেত লম্বা হয়ে গেছে।

1000034469.jpg


1000034466.jpg



পুইশাক গাছ বড় হলে কেটে খাওয়া শুরু করলে আরও বিভিন্ন জায়গা থেকে ডাল গজিয়ে যায়। আর এই পুঁইশাক গাছ একবার হলে সহজে মরে না। আমার শ্বশুরবাড়ি থেকে লঙ্কার গাছ লাগানোর জন্য আমাকে কিছু খুব ঝাল লঙ্কার বীজ দিয়েছিল অর্থাৎ শুকনো লঙ্কা দিয়েছিল। আমি গাছ লাগিয়ে বেশ কয়েক মাস তাজা লঙ্কা খেয়েছিলাম এবং সেখান থেকে আমিও কিছু বীজ বানিয়ে রেখে দিয়েছি। কয়েকটা বীজ সেখান থেকে আবার দিদিকে দিয়েছিলাম যাতে দিদি ও লঙ্কার গাছ লাগিয়ে সেখান থেকেই টাটকা লঙ্কা দিয়ে রান্না করে বা যে কোন খাবারে দিয়ে খেতে পারে। সেই লঙ্কা বীজ থেকে ছোট ছোট চারা তৈরি হয়ে গেছে। আর কিছুদিন পরেই দেখা যাবে এই গাছেও লঙ্কা ধরবে। এই ভাবেই দিদি বিভিন্নভাবে বুদ্ধি খাটিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে এক একটা জিনিস সংগ্রহ করে নিজের ছাদ বাগানটি সুন্দরভাবে গুছিয়ে নিয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন পুদিনা পাতা, ধনেপাতা, এবং পুজোর জন্য ও বাড়ির মঙ্গল কামনার জন্য রাধা তুলসী এবং কৃষ্ণ তুলসী গাছ তো আছেই। বিভিন্ন প্রয়োজনে বিভিন্ন গাছ দিদি প্রতিনিয়ত লাগাতেই আছে। তাই দিদির ছাদ বাগানে গেলে গাছগুলো দেখে মনটা অনেক বেশি ভালো হয়ে যায়।

1000034451.jpg


1000034467.jpg


ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm



আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

1000040965.jpg

1000040964.jpg

1000040963.jpg

টুইটার প্রমোশনের ক্ষেত্রে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে সেটা সম্ভবত আপনি জানেন না। আমার বাংলা ব্লগের ডিসকর্ডে Daily Task নামে নতুন একটা চ্যানেল খোলা হয়েছে। সেখানে প্রতিদিন কিছু টুইটারের লিংক শেয়ার করা হয় এবং তার নিচে লিখে দেয়া হয় কমেন্ট, রিএ্যাক্ট, কোয়েট করার বিষয়টি। সেটা প্রতিদিন সম্পন্ন করার অনুরোধ করা হলো। এগুলো নিয়ে প্রতি সপ্তাহে আবার পোষ্ট করার আহবান জানানো হয়, সেটা এই পোষ্ট পড়ে জানতে পারবেন-
https://steemit.com/announcement/@hafizullah/ghtfd-or-or

আপনার দিদির ছাদ বাগানে দেখতেছি তো অনেক ধরনের গাছ আছে। আমার কাছে সবচেয়ে বেশি সবজি গাছ গুলো দেখে অনেক ভালো লাগলো। আমাদের এখানেও আমরা কয়েকটি সবজি গাছে লাগিয়েছি। কারণ যে কোন ধরনের গাছ থেকে সবজি অথবা ফল পেলে আমার অনেক আনন্দ লাগে। যাইহোক আপনার দিদির বাড়িতে গিয়ে এত সুন্দর একটি মুহূর্ত উপভোগ করেছেন এবং আমাদের মাঝেও শেয়ার করেছেন তার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।