কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
সেই পুরনো যুগ থেকে দেখা যাচ্ছে মেয়েরা অত্যাচারিত এবং অসহায়। বিবাহিত জীবনে মেয়েরা পুরুষ মানুষের বিভিন্ন ধরনের অত্যাচার, কটু কথা এবং অভাব অনটন সহ্য করে চলেছে। সেই সময়ে মেয়েরা ছিল অশিক্ষিত। সমাজের মানুষ এবং পরিবারের মানুষের শিক্ষার হার কম ছিল তাই মেয়েদেরকে পড়াশোনা করানোর গুরুত্ব বুঝতো না এবং কখনোই পড়াশোনা করাতো না। বরং কন্যা সন্তান হলে তাদের সংসারের কাজ এবং রান্নার কাজ ছোটবেলা থেকেই শেখানো শুরু করে দেওয়া হতো। ছেলেদেরও যে শিক্ষার প্রয়োজন ছিল সেটা খুবই কম মানুষ বুঝতো। তাই পুরুষ মানুষেরাও অশিক্ষিত হওয়ার কারণে কোনটা ঠিক কোনটা ভুল সেটা কখনোই বুঝতে পারত না। এবং মেয়েদের ছোটবেলা থেকেই শেখানো হতো যে তাদের সবকিছু সহ্য করে, ধৈর্য ধরে এবং সবকিছু মেনে নিয়ে চলতে হবে। কিন্তু দিন যত যাচ্ছে শিক্ষার হার তত বাড়ছে এবং মানুষ অর্থাৎ ছেলে এবং মেয়ে উভয় শিক্ষিত হচ্ছে। তাই বর্তমানে কেউই মুখ বন্ধ করে সহ্য করতে চায় না। বর্তমানে মেয়েরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে জানে। আগেকার সময় দেখা যেত দাম্পত্য জীবনে ছাড়াছাড়ি তুলনামূলক অনেক গুণ কম হতো।
মেয়েরা মুখ বুজে সব অন্যায় অত্যাচার সহ্য করে নেওয়ার কারণে সংসারে একতরফা শাসন হতো এবং সংসার টিকে যেত। কিন্তু বর্তমানে যেহেতু ছেলেমেয়েরা শিক্ষিত এবং স্বনির্ভর তাই কেউ কখনো কারোর অত্যাচার সহ্য করতে পারে না বা বলা যায় সহ্য করতে চায় না। তাই দেখা যায় যেসব পরিবারে পুরুষ মানুষেরা তার স্ত্রীর ওপর অত্যাচার করছে , কটু কথা শোনাচ্ছে সেই সব স্ত্রী কখনোই সেই সংসার করতে চায় না বা করে না। তাই বর্তমান সময়ে দেখা যায় ছাড়াছাড়ি বা বিবাহ বিচ্ছেদ অনেক হারে বেড়ে গেছে। বর্তমান সময়ও যদি মেয়েরা সহ্য করে নেয় এবং পুরুষের অত্যাচারের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ না নেয় তাহলে বর্তমানেও দেখা যাবে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটছে না। আগেকার সমাজে মানুষরা তাদের সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে এবং সংসার ভেঙে যাওয়ার ভয়ে সবকিছু মুখ বুঝে সহ্য করে নিলেও বর্তমান সমাজে সেই ভয় গুলো মেয়েরা কোনভাবেই পায় না। বর্তমানে মেয়েদের আত্মবিশ্বাস আছে যে তারা নিজেকে এবং নিজের সন্তানকে ভালোভাবে দেখতে পারবে এবং সন্তানকে সুন্দরভাবে মানুষ করতে পারবে।
মেয়েদের প্রতি জেনারেশনের ধাপে ধাপে এত পরিবর্তন হওয়ার একটি মস্ত বড় কারণ রয়েছে। মেয়েরা প্রতিনিয়ত তার মা, ঠাকুমা, দিদার ওপর অত্যাচার দেখতে দেখতে বড় হয়েছে। এবং প্রতিনিয়ত নিজেরা শিক্ষা নিয়েছে যে নিজেদের স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং স্বনির্ভর হতে হবে যেন কারোর এই অমানবিক অত্যাচার সহ্য করতে না হয়। বর্তমানে মেয়েরা নিজের জন্য একটু ভাবনা চিন্তা করা শুরু করেছে এবং নিজেকে ভালো রাখার চেষ্টা করে চলেছে তাই অনেক সময় সমাজের কিছু মানুষকে বলতে শোনা যায় যে বর্তমানে মেয়েরা পড়াশোনা করে অনেক বেশি স্বার্থপর, অসামাজিক, এবং খারাপ হয়ে গেছে। বর্তমানে মেয়েরা নাকি আর আগের মত সংসারী নেই। কিন্তু পুরুষ মানুষ যদি মেয়েদের উপর এত অত্যাচার না করতো এবং মেয়েদের একটু সম্মান দিত তাহলে মেয়েদের হয়তো এমন পরিবর্তন এর প্রয়োজনই হতো না। প্রত্যেকটা সম্পর্ক টিকি রাখার প্রচেষ্টা একমাত্র মেয়েদেরই থাকে। আর মেয়েরা যখন একটি সম্পর্কে কোন সম্মান বা ভালোবাসা পায় না এবং ব্যর্থ হয়ে হাল ছেড়ে দেয় তখনই সম্পর্কটা ভেঙ্গে যায়। ছেলেদের কোনই প্রচেষ্টা থাকে না একটি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার।
তাই দেখা যায় আমাদের সমাজের প্রতিনিয়ত কোন সম্পর্ক ভাঙলে মেয়েদেরই দোষারোপ করা হয়। কারণ সমাজের মানুষও এটা খুব ভালোভাবে জানে যে মেয়েরা সহ্য করলে সম্পর্ক টেকে এবং সহ্য না করলে সম্পর্ক ভেঙে যায়। যেসব সম্পর্কে সম্মান থাকে না ভালোবাসা থাকে না এবং একে অপরের প্রতি কোন গুরুত্ব থাকে না সেসব সম্পর্ক থাকার থেকে না থাকাই ভালো। বর্তমানে মেয়েরা এই কথাটা ভালো করে বুঝে গেছে এবং সেই জন্যই খারাপ একটি সম্পর্ক বা দাম্পত্য জীবনের বোঝা বয়ে না বেরিয়ে সম্পর্কটাকে শেষ করে দিয়েই দুজন নিজ নিজ জীবনে ভালো থাকার চেষ্টা করে থাকে। এক হাতে যেমন তালি বাজে না তেমন একজনের প্রচেষ্টায় কখনো একটি ভালো সম্পর্ক গড়তে পারে না বা বজায় থাকতে পারে না। মেয়েরা সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার প্রচেষ্টা একটু কমিয়ে দিলেই বোঝা যায় যে প্রত্যেকটি সম্পর্ক মেয়েদের উপর কতটা নির্ভরশীল। এবং বেশিরভাগ সম্পর্কে এই প্রচেষ্টা একতরফাই মেয়েরা করতে থাকে। তাই হয়তো বর্তমান সমাজের মেয়েরা কোনটা ভালো সেটা বুঝে গেছে। এবং কিছু কিছু অসহ্যকর সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে।
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আসলে মেয়েরা সব পাড়ে। তবে তাদের ওপর অত্যাচার করলে আগে মেনে নিত কিন্তু এখন আর মেনে নেওয়া হয় না। এখন মেয়েরা প্রতিবাদ করতে জানে। বেশ ভালো লিখেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সম্পর্ক শুধু মেয়েদের উপর নির্ভর করে না, এটি উভয় পক্ষের আন্তরিকতা, শ্রদ্ধা ও সহযোগিতার উপর গড়ে ওঠে। সঠিক যোগাযোগ ও পারস্পরিক বোঝাপড়াই একটি সুস্থ সম্পর্ক বজায় রাখার মূল চাবিকাঠি।সম্পর্কে উভয় পাশের দায়িত্ব সমান গুরুত্বপূর্ণ। শুধু মেয়েদের দায়িত্ব দেওয়ার পরিবর্তে পুরুষদেরও সমান ভূমিকা রাখা উচিত, যাতে সম্পর্কে ভারসাম্য বজায় থাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit