সম্পর্ক এখন নোংরামিতে পূর্ণ।

in hive-129948 •  10 hours ago 


কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


17464323332521183139884214033515.jpg


সোর্স



আগেকার সময় দেখা যেত সম্পর্কের একটা সম্মান ছিল, মর্যাদা ছিল এবং সাথে ছিল গুরুত্ব। যার সাথে যে সম্পর্ক সে সম্পর্কটাকে অত্যন্ত সম্মানের সাথে পালন করা হতো। সম্পর্কের সীমা কখনোই অতিক্রম করতো না আগেকার মানুষ। সম্পর্কে বড় হলে যথেষ্ট সম্মান দেয়া হতো। আর সম্পর্কে ছোট হলে তাকে যথাযথ ভালোবাসা দেওয়া হতো। কিন্তু কোন সম্পর্কের সীমাই কখনো অতিক্রম করতো না আগেকার মানুষ। কিন্তু বর্তমান সময় দেখা যায় মানুষ এত আধুনিক হয়ে গেছে যে সম্পর্কের গুরুত্ব কমে গেছে তার সাথে কমে গেছে সম্পর্কের সম্মান। বর্তমান সমাজে একটি মানুষের সাথে অন্য একটি মানুষের সম্পর্কে যথেষ্ট সম্মান করতে দেখা যায় না অর্থাৎ বৌমা ভাসুরের সম্পর্ক, বৌদি দেবরের সম্পর্ক, ভাই বোনের সম্পর্ক, এমনকি জামাইবাবুর সঙ্গে শালীর সম্পর্ক বর্তমানে সীমাহীন নোংরামিতে পরিপূর্ণ দেখা যায়। আগেকার সমাজে যদি এমন সম্পর্কে নোংরামি দেখা যেত বা কোনো পরিবারে হতো তাহলে গ্রামের মানুষ বা পরিবারের মানুষ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করত এবং অবশ্যই শাস্তি দেওয়া হতো। কিন্তু বর্তমান সময়ে ঘরে ঘরে এতটাই বেশি নোংরামি বেড়ে গেছে যে, কে কাকে শাস্তি দেবে?


আগেকার সময়ে তাও মানুষের মুখে মুখে একটা দুটো নোংরা সম্পর্কের কথা শোনা যেত। কিন্তু বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়ার জগতে সরাসরি দেখা যায়। বউয়ের বান্ধবীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক হলেও বর্তমান সমাজে কেমন সাধারণ একটি ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোন বউ যদি নিজের স্বামী ছেড়ে অন্য কারো সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত হয় বা কোন স্বামী যদি তার বউকে ছেড়ে অন্য কারো সঙ্গে পরকীয়া লিপ্ত হয় সেগুলো আমাদের সমাজে এখন যেন স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই মানুষ এখন খুব একটা এইসব বিষয়ে আশ্চর্য হয় না। এমনকি বর্তমান সময় তো দেখা যায় সম্পর্কের নোংরামি এমন চরম সীমানায় পৌঁছে গেছে যে, বাবা তার নিজের কন্যা সন্তানকেও বিয়ে করে নিচ্ছে, আবার অন্যদিকে মা তার নিজের জন্ম দেওয়া পুত্র সন্তানের সঙ্গে অসামাজিক বা অবৈধ সম্পর্কে রয়েছে। সমাজের এইসব সম্পর্কের নোংরামির কারণে পরবর্তী জেনারেশন ক্রমশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চলেছে। কারণ ধীরে ধীরে দেখা যাচ্ছে সম্পর্কের মান মর্যাদা সম্পূর্ণই শেষ হয়ে যাচ্ছে এবং কারো সাথে কারোর সম্পর্কের কোন সীমা রেখা থাকছে না।


পৃথিবীতে কি মানুষের এতটাই অভাব পড়ে গেছে যে নিজের আত্মীয়-স্বজনের সাথে এমন নোংরা সম্পর্কে লিপ্ত হতে হচ্ছে? মানুষের মানসিকতা এতটাই জঘন্য থেকে জঘন্যতর হয়ে উঠেছে যে বর্তমান সময়ে নিজের সন্তানের স্বামীকে অর্থাৎ নিজের জামাইয়ের সাথেও অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে থাকতে দেখা যায় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। আমরা টিভি খুললেই বা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অনেক দূর দূরান্তের বিভিন্ন খবর বিভিন্ন এলাকার সংবাদ দেখতে পেয়ে যাই। যার ফলে আমরা আমাদের সমাজ কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বা মানুষের চিন্তা ভাবনা কতটা নিচে নেমে গেছে সে সম্পর্কে ধারণা করতে পারি। তবে এসব করে কি কখনো কারোর কোন লাভ হতে পারে বা কোন ভালো কিছু হতে পারে? সেটা সম্পর্কে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। কারণ এইসব নোংরামির ফলে মানুষের প্রতি মানুষের বিশ্বাস করা ক্রমশ কষ্টকর হয়ে উঠছে। চারপাশে মানুষ এবং মানুষের কিছু কিছু সম্পর্ক দেখে এতটাই মানুষের মস্তিষ্ক এবং মনের ওপর প্রভাব পড়ছে যে ভালো মানুষকেও বর্তমানে ভালো নজরে দেখা দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। খারাপ মানুষ চারিদিকে এত পরিমান বেড়ে গেছে যে ভালো মানুষ খুঁজে পাওয়া অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে উঠেছে।


আর বর্তমানে যারা এখনো ভালো আছে বা ভালো মন মানসিকতার তাদের পরেও সহজে বিশ্বাস কেউ করতে চায় না। তবে আমাদের অবশ্যই এইসব সম্পর্কের নোংরামির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। না হলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সম্পর্কের মান সম্মান গুরুত্ব ক্রমশ নষ্ট হতে হতে এক সময় সম্পর্ক বলে কোন জিনিসই থাকবে না এতটাই নোংরামিতে ভরে যাবে পৃথিবী। তাই আমাদের নিজেদেরও প্রতিনিয়ত নিজের সম্পর্কের সীমা বজায় রেখে চলতে হবে কখনোই সীমা অতিক্রম করা যাবে না। এবং কেউ যদি আমাদের সাথে খারাপ মন্তব্য প্রকাশ করে বা খারাপ মানসিকতায় মিশার চেষ্টা করে তবে অবশ্যই আমাদের তাদের মানসিকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। সম্পর্ক খুবই মধুর একটা জিনিস, তাই এই সম্পর্ককে নষ্ট করলে আমরা কখনোই পুনরায় এই সম্পর্ক সুন্দর করে গড়তে পারবো না বা ফিরে পাবো না। পৃথিবীটাকে ভালো করতে হলে এবং আমাদের চারপাশের পরিবেশকে এবং পরিবেশের মানুষকে সুস্থ এবং সুস্থ মানসিকতার তৈরি করতে হলে সর্বপ্রথম আমাদের নিজেদেরই ভালো হতে হবে এবং ভালো মানসিকতার তৈরি হতে হবে।



আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

1000041797.jpg

1000041796.jpg

সম্পর্কের সম্মান ও সীমা রক্ষার জন্য পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নৈতিক শিক্ষা জোরদার করতে হবে।পরিবারই হলো প্রথম স্কুল। বাবা-মা যদি সন্তানদের সঙ্গে খোলামেলা ও সুস্থ যোগাযোগ রাখেন এবং নিজেরাই রোল মডেল হন, তাহলে বাইরের নেতিবাচক প্রভাব কমবে।