কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
কোন এক ব্যক্তি যদি অনেক বয়স্ক দেখতে হয়ে যায় কম বয়সেই অথবা মাথার চুল কমে যায় তাহলে স্বাভাবিকভাবেই তাকে একটু অবজ্ঞার চোখে দেখা শুরু করে আমাদের সমাজের মানুষ। কিন্তু আমাদের সমাজের মানুষ কখনোই বুঝতে পারে না যে একটা মানুষ অনেক বেশি মানসিক চাপের মধ্যে থাকলে তার শারীরিক অবনতি ঘটে। আমাদের শরীর প্রত্যেকটা অঙ্গের সাথে প্রত্যেকটা অঙ্গ কানেক্টেড। এমনকি মনের সাথে মস্তিষ্কে চিন্তাভাবনার সাথে ও আমাদের শরীর নির্ভরশীল। তাই একটি মানুষ যখন সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য অনেক বেশি পরিশ্রম করে দিন রাত জেগে পড়াশোনা করে, খাদ্য গ্রহণে অনিয়ম করে তখন এইসব জিনিসের সাইড ইফেক্ট তার শরীরে দৃশ্যমান হবেই। একজন ব্যক্তি যখন তার লক্ষ্য স্থির করে যে, তার একটি ভালো চাকরি পেতে হবে বা একটি সরকারি চাকরি পেতে হবে। তখন সে প্রতিনিয়ত সেই লক্ষ্য অনুযায়ী কাজ করতে থাকে এবং খাওয়া-দাওয়া, বন্ধুদের সাথে আড্ডা ইয়ার্কি, ঘুরতে যাওয়া, মজা করে সময় কাটানো ভুলে এক মনে তারা পড়াশোনা করতে থাকে এবং সেই লক্ষ্য অনুযায়ী অনেক বেশি পরিশ্রম করতে থাকে।
লক্ষ্য অনুযায়ী এগোনোর সময় তারা কখনোই তাদের শরীর নিয়ে চিন্তা করার সময় পায়না বা তাদের শরীর চর্চা করে সময় নষ্ট করে না। একটি ভালো সরকারি চাকরি পেতে হলে অবশ্যই অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হয় এবং জীবনের দীর্ঘ সময় ব্যয় করতে হয়। একটি মানুষের পড়াশোনা শেষ করে তারপর চাকরির জন্য প্রস্তুতি নেওয়া, তারপর বিভিন্ন জায়গায় চাকরির পরীক্ষা দেওয়া এবং অবশেষে অনেক কষ্টের পর চাকরি পেতে পেতে দেখা যায় অনেকেরই অনেক বেশি বয়স হয়ে যায়। আর সাধারণভাবে বয়স বেড়ে গেলে আমাদের শরীরের গ্ল্যামার সৌন্দর্য চাকচিক্য অনেকটাই কমে যেতে থাকে। তাই বর্তমান সময়ে দেখা যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক সরকারি চাকরি করা পুরুষ মানুষদের ট্রোল করা হয়। অনেক মেয়েকে উদ্দেশ্য করে বলতে শোনা যায় যে, সরকারি চাকরি ওয়ালা কাকুকে বিয়ে করেছে। এসব কথা বলা মানুষের মানসিকতা কেমন সেটা নিয়ে আমাদের অবশ্যই ভাববার বিষয় আছে। কারণ সরকারি চাকরি অর্জন করার জন্য তারা যতটা পরিশ্রম করেছে, জীবনের যতটা সময় পার করে দিয়েছে, জীবনের হাসি আনন্দ অনেক কিছু ত্যাগ করেছে যা সাধারণ কোন মানুষ করতে চায় না বা পারে না বলেই তারা সেই যোগ্যতা অর্জন করতে পারে নি।
আসলে মানুষ যেটা পায় না সেটাকেই তারা মূল্যহীন বলে মনে করে এবং সবার কাছে সেটা মূল্যহীন প্রমাণ করার চেষ্টা করে। একটি মানুষের পরিশ্রম এবং তার জীবনের এতটা সময়ের ত্যাগকে আমাদের অবশ্যই সম্মান করা উচিত। কারণ এইসব মানুষ চাকরি পেয়ে যে অনেক টাকার মালিক হয়ে যায় অনেক বেশি সাফল্য পেয়ে যায় জীবনে এমনটা নয়। তাদের প্রতিনিয়ত চাকরি জীবনে সংগ্রাম করে চলতে হয়। নিজের চাকরি বাঁচানো, সংসার এবং সবার প্রয়োজন মেটানো ইত্যাদি বিভিন্ন চিন্তা ভাবনার মধ্য দিয়ে তাদের থাকতে হয়। তার ওপরে আবার কখনো কোন ছুটির প্রয়োজন হলে আগে থেকেই তার জন্য লিখিতভাবে আবেদন করতে হয়। যখন তখন তারা ছুটি নিতে পারেনা এবং প্রচন্ড শরীর খারাপ নিয়েও তাদের বাধ্য হয়ে চাকরিতে যেতেই হয়। এমনকি রাস্তাঘাটে যানবাহনের কোন অসুবিধা হলে তাদের বিকল্প ব্যবস্থা নিতে হয় তবুও তাদের অফিস ছুটি করা যায় না। একজন চাকরিজীবী মানুষ কখনোই নিজের ইচ্ছামত যা ইচ্ছা করতে পারে না সবসময়ই তাদের অফিসে আগে থেকে জানিয়ে রাখতে হয়। আসলে আমরা এমন সমাজে বসবাস করি যে সমাজের মানুষ কাউকে যদি ভালো একটি চাকরি করতে দেখে বা ভালোভাবে জীবন যাপন করতে দেখে তারা মনে করে তারা খুব সুখে আছে এবং অতি সহজেই তারা অর্থ উপার্জন করে এমন সুন্দর জীবন যাপন পালন করে।
কিন্তু এই সুন্দর জীবন যাপনের পেছনে যে কতটা কষ্ট এবং কতটা ত্যাগ লুকিয়ে থাকে সেটা কখনোই দেখেনা। তারা পরিবারের সাথে বেশি সময় কাটাতে পারে না। অফিসের কাজ অনেক সময় বাড়িতে এসেও করতে হয়। অফিসে বসে কাজ করতে করতে যখন শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হয় কোলেস্ট্রল, শরীরের ফ্যাট জমার মত সমস্যা থেকে শুরু করে বিভিন্ন চিন্তার কারণে ডায়াবেটিস হয়ে থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন শারীরিক এবং মানসিক চাপ তো সব সময় থাকে। এই সব কিছু নিয়ে সহ্য করে একটি মানুষ তার সংসার এবং সংসারের মানুষদেরকে ভালো রাখার চেষ্টা করে। তবুও সমাজের মানুষ একজন চাকরিজীবী ব্যক্তি দেখলেই তার সম্পর্কে এমন বাজে কিছু মন্তব্য করে যা শুনতে অনেক বেশি খারাপ লাগে। একজন চাকরিজীবী মানুষের জীবনে অনেক বেশি ত্যাগ করতে হয় এবং শখ সৌখিনতা সব ভুলে থাকতে হয়। দিনের পর দিন অনেক চেষ্টা এবং পরিশ্রমের পর একটি মানুষ একটি ভালো চাকরি পায় এবং তারপরেও চাকরি জীবনেও অনেক কষ্টের এবং পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে দিন কাটে। তাই আমাদের কখনোই তাদের বয়স, শারীরিক গঠন বা সৌন্দর্য নিয়ে কোন খারাপ মন্তব্য করা উচিত নয়। বরং তাদের প্রতিনিয়ত যোগ্য সম্মান দেওয়া উচিত।
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার পোস্ট থেকে অনেক কিছু শিখলাম! আপনি যদি ক্যারিয়ারে আরও এগিয়ে যেতে চান, তাহলে নিয়মিত নেটওয়ার্কিং ইভেন্টে যোগ দিতে পারেন বা নতুন স্কিল ডেভেলপ করার জন্য অনলাইন কোর্স করতে পারেন। আপনার অভিজ্ঞতা অন্যদের জন্য খুবই মূল্যবান।আপনার অধ্যবসায় সত্যিই অনুকরণীয়! প্রতিকূলতাকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়ার আপনার গল্প অনেক তরুণ পেশাজীবীকে অনুপ্রাণিত করবে। এমন সাফল্যের গল্প শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit