কৃষকের করুণ বাস্তবতা প্রাকৃতিক দুর্যোগের নিষ্ঠুর ছোবল

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

🥰...এবং হিন্দু ভাই বোনদের কে আদাব.💗🙏।আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ? আশা করছি সকলেই ভালো আছেন। আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন নতুন সদস্য, এই প্লাটফর্মের সাথে দীর্ঘ কয়েক মাস আগে যুক্ত হয়েছি। সত্যি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে যুক্ত হতে পেরে আমার কাছে অনেক ভালো লাগতেছে ।আজকে আমি আপনাদের সাথে কৃষকের করুণ বাস্তবতা প্রাকৃতিক দুর্যোগের নিষ্ঠুর ছোবল অনুভূতি শেয়ার করবো । আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

বাংলাদেশ একটি কৃষিনির্ভর দেশ। দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড হলো কৃষক সমাজ। কিন্তু প্রতিবছর কোনো না কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ তাদের কষ্টার্জিত ফসলকে বিপর্যয়ের মুখে ফেলে দেয়। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। এপ্রিল ও মে মাসে টানা ঝড়-বৃষ্টি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কৃষকের ফসল নষ্ট করে দিয়েছে। বিশেষ করে ভুট্টা, ধানসহ অন্যান্য মৌসুমি ফসল ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছে।

প্রকৃতির রূপ কেবল সৌন্দর্যে নয়, অনেক সময় তার কঠিন রূপও আমাদের জীবনকে তছনছ করে দেয়।প্রকৃতি কখনো কখনো আমাদের জীবনে আশীর্বাদ হয়ে আসে, আবার কখনো কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি দাঁড় করায়। সাম্প্রতিক কয়েক দিনের ঝড়-বৃষ্টিতে আমাদের গ্রামের কৃষক ভাইদের পরিশ্রমের ফল এক নিমিষেই ভেসে গেছে। উপরোক্ত ছবিগুলো তারই এক মর্মান্তিক প্রমাণ।

উপরের ছবিগুলোতে দেখা যাচ্ছে ভুট্টার ক্ষেতের বেহাল অবস্থা। ক্ষেতগুলোতে ভুট্টার গাছ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে ছিল, সেগুলো এখন ঝড়ে ভেঙে পড়েছে। অনেক গাছের শিকড় উঠে গেছে, আবার কোনো কোনো গাছ মাটিতে হেলে পড়ে শীষগুলোর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত করছে। যে গাছগুলো একসময় সবুজের আচ্ছাদনে দুলছিল, সেগুলো এখন মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। কৃষকের চোখের সামনে এভাবে ফসল নষ্ট হতে দেখার যন্ত্রণা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।

নীচের ছবিতে ধানক্ষেতের অবস্থাও করুণ।পাকার মুখে থাকা ধান ঝড়ে পড়ে মাটির সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। পানি জমে গাছের গোড়া নরম হয়ে যাচ্ছে এবং ধানের শীষে পচন ধরছে। কৃষক কত স্বপ্ন নিয়ে এই ধান ফলিয়েছে, আশা ছিল কষ্টের পরিশ্রমের ফল পাবে। কিন্তু ধানের ক্ষেতের অবস্থা দেখলেই বোঝা যায়, ঝড়ে সব নষ্ট। ক্ষেতের সবুজের মাঝে পাকা ধানগুলো মাটিতে লুটিয়ে আছে ,যেন কৃষকের স্বপ্নও মাটির সাথে মিশে গেছে।

কৃষকের জীবন এমনই একদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ধাক্কা, অন্যদিকে সংসারের দায়-দায়িত্ব। এই ফসলের উপরই নির্ভর করে তাদের সারা বছরের খাবার, সন্তানের পড়াশোনা আর পরিবারের অন্যান্য প্রয়োজন। তাই এই ক্ষতি শুধু অর্থনৈতিকই নয়, মানসিক আঘাতও বয়ে আনে।প্রকৃতিকে ভালোবাসা যেমন প্রয়োজন, তেমনি তার রুদ্ররূপ মোকাবিলার সমখীন হওয়াও জরুরি।

বাংলাদেশের ভৌগোলিক ও প্রাকৃতিক অবস্থানের কারণে প্রতি বছর কৃষকদের এই ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এমন দুর্যোগের প্রকোপ আরও বেড়ে যাচ্ছে। কখনো অকাল বৃষ্টি, কখনো ঘূর্ণিঝড়, কখনোবা শিলাবৃষ্টি; প্রকৃতি যেন কৃষকের ভাগ্যের সঙ্গে এক অদৃশ্য লড়াই করে চলেছে। কৃষকেরা এই লড়াইয়ে বারবার পরাজিত হচ্ছেন, তবু তারা হার মানছেন না। আবারও বীজ বুনছেন, নতুন আশার শেকড় গেড়ে তুলছেন।

এই দুর্যোগের প্রভাবে কৃষকের অর্থনৈতিক অবস্থা যেমন বিপর্যস্ত হচ্ছে, তেমনি সামগ্রিকভাবে দেশের খাদ্য নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়ছে। ফসলহানির কারণে বাজারে খাদ্যের স্বল্পতা দেখা দিতে পারে, যা দরিদ্র মানুষের জন্য আরেকটি বড় সংকট ডেকে আনতে পারে। কৃষকের এই ক্ষতি পূরণে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন উদ্যোগ থাকলেও তা এখনো যথেষ্ট কার্যকর হয়ে ওঠেনি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় কৃষি খাতকে আরও শক্তিশালী করা এবং কৃষকের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আজ সময়ের দাবি।

আমরা যারা শহরে বসে প্রতিদিনের খাবারের কথা ভাবি, আমাদের মনে রাখা উচিত প্রতিটি দানা ভাতের পেছনে একজন কৃষকের অগাধ শ্রমের গল্প লুকিয়ে থাকে। কৃষকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কেবল মুখের কথা নয়, তা হতে হবে বাস্তব পদক্ষেপে। এই কঠিন সময়ে কৃষকের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমরা যদি সবাই মিলে কৃষকের দুঃখ বুঝে তাদের পাশে দাঁড়াই, তবেই সত্যিকার অর্থে আমরা উন্নত এক দেশের স্বপ্ন দেখতে পারি।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।