আসসালামু আলাইকুম প্রিয় "আমার বাংলা ব্লগের" সম্মানিত সদস্য ভাই ও বোনেরা আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি জেনারেল রাইটিং গল্প শেয়ার করব। আশা করি সম্পূর্ণ গল্পটি পড়লে আপনাদের ভালো লাগবে এবং আপনারা নতুন কিছু জানতে পারবেন।
আজ বলছি বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী বিষখালী নদীর কথা। এই নদীতে জীবন দিতে হয়েছে আমার ফুফা মোঃ আব্দুর রহমানকে। বিষখালী নদীকে কেন্দ্র করেই এখানকার অধিকাংশ মানুষের জীবন যাপন ও জীবিকা নির্বাহ । নদীটি এখানকার মানুষকে মাতৃত্তের ছায়া দিলেও মাঝেমধ্যে তার ভয়ঙ্কর রূপ দেখা যায়। কিছুদিন আগের কথা আমার ফুফা নদীতে জাল দিয়ে মাছ ধরতেছিলেন। এমন সময় দৈত্যাকৃতির কোন মাছ অথবা ভয়ংকর কোন প্রাণী অথবা অদৃশ্য কোন শক্তি হঠাৎ তাকে পানির তলদেশে নিয়ে যায়। এরপর তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায় না দুই তিন দিন খোঁজাখুঁজির পরেও তাকে আর পাওয়া যায়নি। এরই মধ্যে এখানকার জেলেরা নদীতে জল টেনে নৌকা দিয়ে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার কোন সন্ধান পায়নি কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হলো তিনদিন পরে তিনি যেই জায়গায় ডুবে গিয়েছিলেন ঠিক সেই জায়গায় তার মৃতদেহ পাওয়া যায়। তখন মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করতে শুরু করতে শুরু করে।
শুধু তাই নয় এক সময়ে এই এলাকার মানুষের পেশা ছিল নদীতে মাছ ধরা। পেশার তাগিদে আমার বাবাও একসময় নদীতে মাছ শিকার করত যদিও তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী কিন্তু শুরুতে যখন তিনি নদীতে মাছ ধরতেন তখন তার সাথে হঠাৎ এর থেকেও ভয়ঙ্কর একটি ঘটনা ঘটে। তিনি নদীতে মাছ ধরতেছিলেন এমন সময় নদীর একটি ঢেউ এসে তাকে নৌকা থেকে ফেলে দেয় সে ডুবে গিয়ে জালের টোনের মধ্যে চলে যায় । টোন হলো যেখানে মাছগুলো জমা হয় সেই জায়গা। তিনি কিছুতেই সেই জায়গা থেকে বের হতে পারছিলেন না বাবার মুখের কথা একটা পর্যায়ে তিনি ধরে নিয়েছিলেন তার মৃত্যু অবধারিত কারণ ওই সময় নদী ছিল নির্জন লোকজন ছিল খুবই কম কিন্তু আল্লাহর কি অশেষ রহমত অনেক দূরে একজন জেলে ছিলেন হাসন খাঁ নামে তিনি দূর থেকে খেয়াল করেছিলেন দূরে একটা নৌকায় আমার বাবা মাছ শিকার করছিলেন হঠাৎ আর তাকে দেখতে পান না এমত অবস্থায় হাসন খাঁ কয়েকটি ডাক দিয়েছিল তাতে কোন সাড়া না পেয়ে সে বুঝতে পেরেছিল আমার বাবার যে কোন একটা বিপদ হয়েছে।
সে দ্রুত তার নৌকা নিয়ে আমার বাবার কাছে আসে এবং এসে তিনি দেখতে পায় যে সে জালের টেনে আটকে গেছে দ্রুত জাল কেটে আমার বাবাকে উদ্ধার করে এবং সেবারের মত আমার বাবা প্রাণে বেঁচে যায়
শুধু এই দুটি ঘটনা দিয়েই এই নদীর ভয়াবহতা ব্যাখ্যা করা যাবে না এ রকমের অসংখ্য ঘটনা এখানকার মানুষের সাথে ঘটেছে। ২০০৭ সালের ভয়াবহ বন্যা সিডরে নদীর পানি বিপদসীমার উপরে উঠে এই এলাকার সমস্ত ঘরবাড়ি মানুষের সহায় সম্বল যা কিছু ছিল সব ভাসিয়ে নিয়ে যায়। মাঝেমধ্যেই নদী তার ভয়ংকর রূপ ধারণ করে এত বেশি পানি ফুলে উঠে যে এখানকার মানুষের সব সময় পানি আর বন্যার সাথে লড়াই করে বাঁচতে হয়। তারপরও মানুষ এই নদীর সাথে গভীরভাবে জড়িত প্রতিদিন এখানে চলে মাছ ধরার ব্যাপক আয়োজন। এই নদী যেমন মাঝেমধ্যে মানুষের সব কিছু কেড়ে নেয় আবার এই নদী মানুষকে জীবিকা নির্বাহ করে বাঁচতে সহযোগিতা করে। হয়তো এমন নদী আরও বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে তবে আমাদের এই নদীটি বঙ্গোপসাগরের সাথে সংযুক্ত হওয়ায় বেশি সুবিধা পাওয়া যায় অপরদিকে আবার দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে এই নদীর ভয়াবহ রূপ দেখা দেয়।
আমার লেখা গল্পটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টে মতামত ভুল করবেন না।
আবারো কথা হবে পরবর্তী কোনো লেখায় সেই পর্যন্ত ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন.....