খেটে খাওয়া মানুষদের খেলা দেখার উত্তেজনা

in hive-129948 •  2 years ago 

হ্যাল্লো বন্ধুরা

প্রিয় আমার বাংলা ব্লগবাসী, সবাইকে আমার নমষ্কার /আদাব। শুভ সকাল। আশা করছি এই সুন্দর একটি দিনে আপনারা সকলে ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও মহান সৃষ্টিকর্তার আশির্বাদে ভালো আছি। আজ আবারো হাজির হয়েছি নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। এই পোস্ট সম্পর্কে আপনাদের মুল্যবান মতামত অবশ্যই কমেন্ট করে জানানোর অনুরোধ রইলো।


গতকাল ছিলো ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড কাপ ফাইনাল ম্যাচ। তো এমন বড় বড় ম্যাচগুলোর সময় বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ করে এলাকার মাঠগুলোয় প্রজেক্টরের মাধ্যমে বড় পর্দায় খেলা দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়। আমি অফিস থেকে ফেরার পথে রাস্তায় দেখছিলাম বিভিন্ন জায়গায় ইলেকট্রনিকস এর দোকান গুলোর সামনে যথেষ্ট ভীড়। বেশিরভাগ ইলেকট্রনিকস এর দোকানের সামনের অনেক গুলো রিক্সা দাঁড়ানো আবার সাথে পথচারীরাও যোগ দিয়েছে৷
এক লোক তো এক রিক্সাওয়ালাকে জিজ্ঞেস করছিলো তিনি যাবেন কিনা। উত্তরে রিক্সাওয়ালা মামা বলে, "মামা সিরিয়াস মোমেন্ট চলে, এখন যাওয়া যাবে না। খেলাটা শেষ হোক, তারপর বাকি ট্রীপ মারবো। " আমি পাশ দিয়ে হেটে যাওয়ার সময় বেশ কতক্ষণ হেসেছি। তবে তার পরপরেই মনে হলো, আমাদের দেশে বর্তমানে যেমন সার্বিক পরিস্থিতি, এই পরিস্থিতিতে যে কোন মধ্যবিত্ত পরিবারের ই কষ্ট হয়ে যাচ্ছে পরিবার চালাতে, সেখানে এই খেটে খাওয়া মানুষ গুলো অফিসের পিক টাইমে যাত্রী নিতে মানা করছে বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা দেখার জন্য। এজন্যই বলে, শখের তোলা আশি টাকা! বাঙালি বরাবরই আবেগপ্রবণ জাতি। আর খেলার প্রতি বাঙালির অন্যরকম আবেগ কাজ করে তা তো বলার বাহিরে। সে ক্রিকেট বিশ্বকাপ হোক কিংবা ফুটবল বিশ্বকাপ!

আবার, এখন অনেকেরই দুই-তিনটা স্মার্ট ফোন... একটা দিয়ে হয় না। সেখানে এই খেটে খাওয়া মানুষ গুলো বেশিরভাগই এখনো এনালগ বাটন ফোন ই ব্যবহার করে। টাকা খরচ করে স্মার্ট ফোন কেনার বা চালানোর মতোন অবস্থাও তো তাদের নেই। সেখানে ইন্টারনেট কিনে ফোনে খেলা দেখা তো বিশাল বিলাসীতা। তাই এমন ইলেকট্রনিকস এর দোকানের সামনে বা বড় পর্দায় যেখানে খেলা দেখানো হয়, সেখানে বসে খেলা দেখা ছাড়া এমন খেটে খাওয়া মানুষগুলোর আর উপায় ই বা কী! এইটুকুতেই তাদের বিনোদন। ভালো থাকুক এই খেটে খাওয়া মানুষ গুলো। দিন শেষে পেটের দায় মিটাতে তাদের শখ বা বিনোদন গুলো মরে না যাক, এটুকুই চাওয়া।

এই ছিলো আমার আজকের আয়োজন।

এতক্ষণ সময় নিয়ে আমার পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে
🌼 ধন্যবাদ 🌼

VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR
@rme as your proxy
witness_vote.png

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

IMG_20211205_182705.jpg

আমি- তিথী রানী বকসী, স্টিমিট আইডি @tithyrani। জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। পেশায় একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। বিবাহিতা এবং বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছি।২০২৩ সালের জুন মাসের ১৯ তারিখে স্টিমিটে জয়েন করেছি।
ভ্রমণ করা, বাগান করা, গান শোনা, বই পড়া, কবিতাবৃত্তি করা আমার শখ। পাশাপাশি প্রতিদিন চেষ্টা করি নতুন নতুন কিছু না কিছু শিখতে, ভাবতে। যেখানেই কোন কিছু শেখার সুযোগ পাই, আমি সে সুযোগ লুফে নিতে চাই৷ সর্বদা চেষ্টা থাকে নিজেকে ধাপে ধাপে উন্নত করার।



Posted using SteemPro Mobile

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

ঠিক বলেছেন আপু যেখানে আমাদের মাঝে মাঝে দু-তিনটা অ্যান্ড্রয়েড ফোনেই হয় না সেখানে এই খেটে খাওয়া মানুষদের হাতে একটি বাটন ফোন। সত্যি খুবই খারাপ লাগলো এটা ভেবে। কি আর করার এই মানুষগুলোর তো ১৫-২০ হাজার টাকা খরচ করে একটা এন্ড্রয়েড ফোন কেনার সামর্থ্য নেই। কিন্তু বিনোদনের জন্য তারা ভালো একটি উপায় খুঁজে নিয়েছে 🙂। যাইহোক এ মানুষগুলোর প্রতি রইল অনেক অনেক ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা।

সেটাই আপু। এর জন্য যে সেই রিক্সাওয়ালা কোথাও যেতে মানা করে দিলো, এইটাই পরে আমাকে অবাক করেছে। আমরা বোধ হয় ভাবি না যে তাদেরও লাইফে বিনোদন এর প্রয়োজন আছে।

Posted using SteemPro Mobile

আসলে আপু ঠিক বলেছেন বাঙালি আবেগপ্রবণ জাতি। বিশেষ করে যদি ফুটবল খেলা হতো তাহলে তো তারা কাজকাম বাদ দিয়ে টিভির সামনে বসে যেত। ক্রিকেট খেলার দেখতে বেশি সময় লাগে জন্য অতটা মানুষের ভিড় থাকে না তারপরও শেষ মুহূর্তে তারা সবাই খেলা দেখার জন্যই ব্যস্ত হয়ে পড়ে। বিনোদন সবার জীবনে প্রয়োজন তাইতো যে কোন মূল্যে বিনোদন গ্রহণ করতে হবে।

Posted using SteemPro Mobile

সবার জীবনেই বিনোদন ভীষণ ভাবে প্রয়োজন এবং তা হতে হবে সুস্থ বিনোদন।

Posted using SteemPro Mobile

দিদি গো কি করবে তারা বলেন তো? ঐ যে বললেন সখের তোলা আশি টাকা সত্যিই কিন্তু তাই। খেটে খাওয়া মানুষ গুলোর ও তো মনে চায় একটু খেলা দেখতে তাই না। আর এই জন্যই তো তারা ট্রিপ বাদ দিয়ে নিজের সখ টা আগে পূরণ করে। খেটে খাওয়া মানুষ গুলো কে নিয়ে দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।

শহরের রাস্তার অলিতে গলিতে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে এই খেটে খাওয়া মানুষগুলোর বরাবরই খেলাধুলার প্রতি অনেক বেশি আকর্ষণ রয়েছে। গতকাল সন্ধ্যেবেলায় রিক্সা করে ধানমন্ডি যাচ্ছিলাম রিকশায় ওঠার সাথে সাথে মামা জিজ্ঞেস করল মামা খেলার কি অবস্থা। কথাটা শুনে রীতিমতো অবাক হয়েছিলাম বটে তবে তাকে পুরো ব্যাপারটা বুঝলাম সে ইন্ডিয়া জিতে যাবে আজকে। রিকশা দিয়ে যাওয়ার সময় আমিও আপনার মত এরকম অনেক জায়গায় দেখেছিলাম খেটে খাওয়া মানুষগুলো ইলেকট্রনিক্স দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে খেলা দেখছি। আসলে তাদের হয়তোবা সেরকম সাধ্য নেই স্মার্টফোন ব্যবহার করার তবে এই মানুষগুলো খেলা দেখার প্রতি বরাবরই অনেক বেশি আকৃষ্ট। ধন্যবাদ চমৎকার একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

হ্যা, খেলা চলাকালীন সময়ে এমন ভীড় প্রায়ই চোখে পড়ে। ঠিকঠাক মতোন খাওয়া-পড়া ম্যানেজ করতে করতেই হিমশিম খেতে হয় যাদের, তাদের আর স্মার্টফোন বা ইন্টারনেট এর বিলাসীতা! তবুও এমন করে কিছু না কিছু উত্তেজনা, কিছু না কিছু বিনোদন তাদের জীবনেও থাকুক।

Posted using SteemPro Mobile

আসলে কিছু কিছু মানুষ আছে যারা খেলা পেলে আর কিছু ভাবেই না। আর বিশ্বকাপের সময় সেগুলো তো আরো বেশি দেখা যায় সেটা হোক ফুটবল কিংবা ক্রিকেট। আর খেটে খাওয়া মানুষ যাদের নিজের টাকা খরচ করে হয়তো খেলা দেখার সুযোগ নেই কিন্তু কোথাও সুযোগ পেলে সেটা আর হাতছাড়া করতে চায়না। যাই হোক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

আবেগপ্রবণ বাঙালির আবেগের জায়গা হচ্ছে খেলা
আপনাকে ধন্যবাদ ভাই।

Posted using SteemPro Mobile